এক দশকে বিশ্বে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে : জাতিসংঘ

লড়াই–সংঘাত, নির্যাতন–নিপীড়ন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার শিকার হয়ে বিশ্বে বাস্তুচ্যুত হওয়া মানুষের সংখ্যা গত এক দশকে দ্বিগুণ হয়েছে। মহামারিতে স্থবির বিশ্বেও গত বছর ঘর ছাড়তে হয়েছে অন্তত ৩০ লাখ মানুষকে। যা নিয়ে শরণার্থীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে আট কোটি ২৪ লাখ। দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি চার কোটি মানুষ। আজ শুক্রবার জাতিসংঘের দুটি সংস্থা আলাদা প্রতিবেদনে এসব তথ্য প্রকাশ করেছে।
করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যেও সারা বিশ্বে থেমে নেই সহিংসতা, সংঘাত, নিপীড়ন কিংবা মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো ঘটনা। এতে রেকর্ড সংখ্যক মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা-ইউএনএইচসিআর, বার্ষিক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। বাস্তুচ্যুত মানুষের এই সংখ্যা এক দশকে দ্বিগুণ হয়েছে। তার মানে, বিশ্বে এক শতাংশেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
এ ব্যাপারে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি বলেন, ‘করোনা মহামারির মধ্যে গত বছর আমাদের অধিকাংশ মানুষের চলাচল বাস্তবিক অর্থেই অসম্ভব হয়ে পড়েছিল। এর মধ্যেই জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতির শিকার হয়েছে ৩০ লাখ মানুষ। চলতি বছরের সংখ্যা যোগ করলে, বিশ্বব্যাপী বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা ১০ কোটি ছাড়িয়ে যাওয়া এখন সময়ের ব্যাপারমাত্র।’
করোনার কারণে সীমান্তে নিষেধাজ্ঞা থাকায় নিপীড়নের শিকার হয়ে নিজ দেশের ভেতরেই বাস্তুচ্যুত হয়েছে প্রায় পাঁচ কোটি মানুষ।
এই পরিস্থিতিতে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি বলছে, চরম আবহাওয়া এবং মহামারির কারণে প্রকট হবে খাদ্য সংকট। ইয়েমেন, সিরিয়া, আফ্রিকায় দেখা দিতে পারে দুর্ভিক্ষ। বিশ্বব্যাপী চরম দরিদ্র মানুষের সংখ্যাও আরও বাড়তির দিকে যাবে।
বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির মুখপাত্র থমসন ফিরি বলেন, লাখ লাখ শরণার্থীর ভবিষ্যত অনিশ্চিত। করোনার কারণে ক্ষুধা-দারিদ্র্য আরও বেড়েছে। চার কোটি মানুষ দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি। মহামারিজনিত অচলাবস্থায় দাতারা কম অনুদান দিচ্ছে। যা খাদ্য সঙ্কটকে আরও বাড়িয়ে দিবে।
করোনা বিধিনিষেধ শিথিল হয়ে গেলে সংঘর্ষ-সংঘাতের কারণে শরণার্থী সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি খাদ্য সঙ্কটও আরও বেড়ে যেতে পারে বোলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ।