এবার ইতালির সেনাপ্রধান করোনাভাইরাসে আক্রান্ত
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে ইতালি। দেশটিতে একদিনে ১৩৩ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৬৬ জনে। আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে সাত হাজার ৩৭৫ জনে। এ অবস্থায় জরুরি অবস্থা জারি করেছে ইতালি সরকার।
তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদুলু এজেন্সি জানিয়েছে, এবার দিশটির সেনাপ্রধান সালভেতর ফারিনার শরীরে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। ফলে ফারিনাকে তাঁর নিজ বাড়িতে অন্তত দুই সপ্তাহের জন্য আলাদা থাকতে হচ্ছে।
জেনারেল ফারিনা রোববার অসুস্থবোধ করলে তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। এতে দেখা যায়, তাঁর শরীরে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব রয়েছে। পরে চিকিৎসকদের পরামর্শে অন্যদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে তিনি ১৪ দিন তাঁর বাড়িতে একা থাকার সিদ্ধান্ত নেন।
সালভেতর ফারিনা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় এরই মধ্যে দেশটির ভারপ্রাপ্ত সেনাপ্রধানের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। ফারিনার অবর্তমানে জেনারেল বনাতো এ দায়িত্ব পালন করবেন।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে তিন হাজার ৮২৫ জনে। এ ছাড়া শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন এক লাখ নয় হাজার ৮৬২ জন। এর মধ্যে চীনে মৃতের সংখ্যা বেড়ে তিন হাজার ১১৯ জনে পৌঁছেছে। দেশটিতে নতুন করে মৃত্যু হয়েছে ২২ জনের। এ ছাড়া চীনে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ হাজার ৭৩৫ জন। নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৪০ জন। নেদারল্যান্ডসভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিএনও নিউজ এসব তথ্য জানায়।
ইতালির লম্বার্ডিসহ ১৪টি প্রদেশের এক কোটি ৬০ লাখ মানুষকে কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দিয়েছে দেশটির সরকার। স্কুল, কলেজ, নাইটক্লাবসহ সব ধরনের গণজমায়েত নিষিদ্ধ। যার যার ঘরে থাকতে হবে। আগামী ৩ এপ্রিল পর্যন্ত এই জরুরি অবস্থা জারি থাকবে।
মোডেনা, পারমা, পিয়াসেনজা, রেজিও এমিলিয়া, রিমিনি, পেসারো, উরবিনো, ভেনিস, পদুয়া, ট্র্যাভিসো, আস্তি, আলেসান্দ্রিয়া, নোভারা, ভারবানো, কুসিও অসসোলা ও ভেরসেল্লি—এসব এলাকা থেকে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কাউকে বের হতে নিষেধ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ইতালির প্রধানমন্ত্রী গুইসেপ কন্তে বলেছেন, ‘আমরা বুঝতে পারি, এই সিদ্ধান্তে মানুষ দুর্ভোগে পড়বে ঠিকই; কিন্তু কঠিন কোনো কিছু মোকাবিলায় আমাদের সবার ছোট-বড় অনেক ত্যাগ করতে হয়। কারণ সময়টা দায়িত্বশীল হওয়ার।’
ইউরোপের আরেক দেশ স্পেনে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১৭ জনের। এ ছাড়া আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৬৭৩ জনে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে ইরান, দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্রসহ আরো অনেক দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে রোগীরা মারা যাচ্ছে। বিশ্বের ১০০টির বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস।
গত বছরের ডিসেম্বরের শেষের দিকে চীনের উহান শহরে প্রথম ধরা পড়ে এ ভাইরাস।