করোনাভাইরাস : ইতালিতে জরুরি আইন অমান্য করায় ৯ বাংলাদেশি আটক
করোনাজনিত কোভিড-১৯ রোগের সংক্রমণে ইতালিতে মৃতের সংখ্যা দুই হাজার ছাড়াল। গেল ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৩৪৯ জনের মৃত্যুর পর, দেশটিতে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ১৫৮ জনে। আর আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭ হাজার ৯৮০ জন। গতকাল সোমবার (১৬ মার্চ) দেশটির নাগরিক সুরক্ষা সংস্থা এ তথ্য জানিয়েছে।
কোভিড-১৯ প্রতিরোধে গত সপ্তাহের সোমবার (৯ মার্চ) থেকে পুরো ইতালিকে রেড জোনের আওতাভুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এরপর থেকেই গৃহবন্দি হয়ে পড়েছে দেশটির প্রায় ছয় কোটি মানুষ। দেশটির ব্যস্ততম শহরগুলো পরিণত হয়েছে জনশূন্য ভুতুড়ে নগরীতে। ইউরোপের দেশটিতে ফার্মেসি ও এলিমেন্টারি শপ (খাবার ও জরুরি পণ্যের দোকান) ছাড়া সব কিছুই বন্ধ রয়েছে।
ইতালির সব শহরের প্রবেশদ্বারে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। এক শহর থেকে অন্য শহরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। শহরে মাইকিং করে ঘর থেকে বের না হওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে। এরপরও যারা অকারণে বাইরে বেরোচ্ছেন তাদের জরিমানা গুণতে হচ্ছে, পড়তে হচ্ছে শাস্তির মুখেও।
রেড জোনের আইন কেউ অমান্য করলে ২০৬ ইউরো জরিমানার বিধান করা হয়েছে। অন্যথায় তিন মাস থেকে ২১ বছর পর্যন্ত জেলও হতে পারে। তবে সরকারি অনুমোদন সাপেক্ষে সফরের সুযোগ রয়েছে।
এদিকে দেশটিতে রেড জোনের আইন অমান্য করায় ৯ জন বাংলাদেশিকে আটক করেছে ইতালির পুলিশ।
গত রোববার (১৫ মার্চ) সন্ধ্যায় ইতালির নাপোলির সান জুসেপ্পে ভেসুভিয়ানো এলাকা থেকে তাঁদের আটক করে স্থানীয় পুলিশ।
স্থানীয় পৌর প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, আটক বাংলাদেশিরা খাদ্যসামগ্রী ক্রয় কিংবা জরুরি প্রয়োজনে বের হওয়ার কোনো প্রমাণ পুলিশকে দেখাতে পারেননি। রেড জোনের আওতায় সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী, একটি পত্রে নিজের বৃত্তান্তসহ নির্দিষ্ট কারণ চিহ্নিত করে বাইরে যাওয়ার অনুমতি ছিল। কিন্তু তাঁরা সেটি মেনে চলেননি।
স্থানীয় পৌর প্রশাসন সূত্র আরো জানায়, যাঁদের আটক করা হয়েছে তাঁরা রাষ্ট্রীয়ভাবে নির্দেশিত একে অন্যের থেকে এক মিটার দুরত্ব বজায় রাখেননি। সে ক্ষেত্রে ইতালীয় আইনে পুলিশ ৬৫০ ধারায় ৯ জন বাংলাদেশিকে আটক এবং সরকারি আইন লঙ্ঘন করায় সংশ্লিষ্ট আইনে জনপ্রতি ২০৬ ইউরো জরিমানা করে। পরে করোনায় আক্রান্ত কি না, তা যাচাই করার জন্য পুলিশ তাঁদের দুই সপ্তাহের জন্য হাসপাতালে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে বলে জানায়।
ইতালিতে প্রায় আড়াই লাখ বাংলাদেশি বসবাস করেন। এরই মধ্যে অল্প কিছু লোক দেশে ফিরলেও বেশিরভাগই এখনো ইতালির বিভিন্ন শহরে গৃহবন্দি জীবনযাপন করছেন।