জাপানে মার্কিন প্রমোদতরীফেরত দুই বয়োজ্যেষ্ঠ যাত্রীর মৃত্যু

জাপানের বন্দরে কোয়ারেন্টাইন করে রাখা যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠানের প্রমোদতরীর আক্রান্তদের মধ্যে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। জাপানি গণমাধ্যমগুলো আজ বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানিয়েছে।
জাপানি সংবাদমাধ্যম এনএইচকে জানিয়েছে, মৃত দুই জাপানি নর-নারীর বয়স আশির কোঠায়। গত ১১ ও ১২ ফেব্রুয়ারি তাঁরা ইয়োকোহামা বন্দরে ভেড়ানো ডায়মন্ড প্রিন্সেস জাহাজ ত্যাগ করেন। এরপর তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁরা আগে থেকেই স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জটিলতায় ভুগছিলেন বলে জানা গেছে।
কোয়ারেন্টাইনে থাকা মোটেও সুখকর অভিজ্ঞতা নয়। ইয়োকোহামা থেকে হংকং ফিরে যাওয়া ডায়মন্ড প্রিন্সেস প্রমোদতরীর যাত্রীরা টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, প্রথম দফায় দুদিনে একবার জাহাজের নির্দিষ্ট ঘরের বাইরে বের হওয়ার সুযোগ ছিল তাঁদের। পরে প্রতি চব্বিশ ঘণ্টায় এক ঘণ্টার জন্য বের হতে পারতেন। তবে খাওয়া-দাওয়ায় কোনো সমস্যা হয়নি বলেও জানান ডায়মন্ড প্রিন্সেসের যাত্রীরা। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
করোনাভাইরাস পরিস্থিতি সামলানো নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে জাপান সরকারকে। জাপানের এক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, প্রমোদতরীর অবস্থা জট পাকিয়ে গেছে। মার্কিন কর্তৃপক্ষও একই কথা বলেছে। জাহাজটিতে থাকা তিন হাজার ৭০০ যাত্রীর মধ্যে ৬২১ জন করোনাভাইরাসজনিত কোভিড-নাইনটিনে আক্রান্ত হন। বাকিরা বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন।
এদিকে চীনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ১১২ জনে। এ ছাড়া আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৭৫ হাজার। মৃত ও আক্রান্তদের বেশিরভাগই চীনের হুবেই প্রদেশের বাসিন্দা। প্রদেশটিতে আজ বৃহস্পতিবার শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত নতুন করে মৃত্যু হয়েছে ১০৮ জনের। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
এরই মধ্যে ইরানে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গতকাল বুধবার দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এই প্রথম রোগটিতে মধ্যপ্রাচ্যে মৃত্যুর ঘটনা ঘটল। চীনের মূল ভূখণ্ডের বাইরে গতকাল বুধবার হংকংয়ে করোনাভাইরাস সংক্রমণে আরো একজনের মৃত্যু হয়। এ নিয়ে দুই জাপানি নাগরিকের মৃত্যুসহ চীনের বাইরে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১০ জনে।
করোনাভাইরাস মোকাবিলায় অবিশ্রান্তভাবে কাজ করছেন চীনা চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। চীনের অন্যান্য প্রদেশ থেকে হুবেই প্রদেশে প্রতিদিনই আসছে চিকিৎসকের দল।
প্রাণঘাতী ভাইরাসটির প্রকোপ নাড়া দিয়েছে গোটা বিশ্বকে। আর চীনের ক্ষতি যে অপূরণীয়, তা বলে দিতে হয় না। গাড়ি বানানো হোক বা সংক্রমণরোধী মাস্ক—সব খাতই স্থবির হয়ে পড়েছে।
চীনে এখন বসন্তকাল। তাই দুর্যোগ যতই থাকুক, প্রকৃতি কিন্তু তার সৌন্দর্য বিলিয়ে দিতে কার্পণ্য করছে না। কিন্তু চীনের মতো জনবহুল দেশে এ সময়টায় সেখানকার নাগরিক ও পর্যটক মিলে যতটা ভিড় হয়, তার বিন্দুমাত্রও নেই এ মুহূর্তে।