তাইওয়ান প্রশ্নে তৃতীয় বিকল্পের খোঁজে ম্যাক্রোঁ

Looks like you've blocked notifications!
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। ছবি : রয়টার্স

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর গত শুক্রবারের বৈঠকে তাইওয়ান নিয়েও আলোচনা হয়েছে। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রধান উরসুলা ফন ডায়ের লাইয়েনও। বৈঠকে ইউক্রেন যুদ্ধ, রাশিয়ার অবস্থান এবং তাইওয়ান নিয়ে চীনের অবস্থান নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে।

গতকাল রোববার (৯ এপ্রিল) বৈঠকের বিষয়ে ফ্রান্সের সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকার ম্যাক্রোঁ বলেন, তাইওয়ান নিয়ে দুটি চরমবিন্দুতে দাঁড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন। যুক্তরাষ্ট্র কড়া অবস্থান নিয়েছে, অন্যদিকে চীন চরম প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে। ইউরোপের এর বাইরে একটি তৃতীয় অবস্থান নেওয়া উচিত। বস্তুত, সেটিকে তৃতীয় মেরু হিসেবে চিহ্নিত করেছেন ম্যাক্রোঁ।

ম্যাক্রোঁ বলেন, তাইওয়ান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র অতিরিক্ত নাক গলাচ্ছে বলে অভিযোগ চীনের। আবার চীন যেভাবে তাইওয়ানের সৈকতে সামরিক মহড়া শুরু করেছে, তা-ও গ্রহণযোগ্য নয়। ফলে ইউরোপকে একটি তৃতীয় বিকল্প খুঁজতে হবে। একটি মধ্যবর্তী অবস্থান নিতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের পথে হাঁটলে চলবে না।

বিশ্ব রাজনীতির প্রসঙ্গ তুলে ম্যাক্রোঁ বলেন, একসময় ইউরোপ তার নিজের নীতি, নিজের কৌশল তৈরি করতো। গত বেশ কিছু বছরে ইউরোপ যুক্তরাষ্ট্রের কৌশল অনুসরণ করছে। এটা বদলানো দরকার। ইউরোপকে নিজের কৌশল, নিজের অবস্থান তৈরি করতে হবে এবং সেটা ইইউকে জোট বেঁধে করতে হবে। একা কোনো দেশের পক্ষে তা করা সম্ভব নয়।

কৌশলগত অবস্থানের প্রসঙ্গে ম্যাক্রোঁ আরও বলেন, সার্বিকভাবে ইউরোপীয় দেশগুলোর সামরিক বাজেট বাড়ানো দরকার। যে পরিমাণ অস্ত্রের প্রয়োজন, সেই পরিমাণ অস্ত্রের জোগান নেই। এর ফলে ইউরোপকে অস্ত্র কেনার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র এবং এশিয়ার দেশগুলোর মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হচ্ছে। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ও চীন দ্রুত তাদের অস্ত্রের সম্ভার বাড়িয়ে চলেছে। এখানেও ইউরোপের দেশগুলো পিছিয়ে পড়ছে। এখানেও ইউরোপকে বিকল্প অবস্থান নিতে হবে।

তাহলে কি তাইওয়ান নিয়ে নাক গলাবে না ইউরোপীয় ইউনিয়ন, এমন প্রশ্নের জবাবে ম্যাক্রোঁ বলেন, ‘তাইওয়ানে শান্তি যাতে বজায় থাকে, সেদিকে লক্ষ্য রাখবে ইউরোপ। কিন্তু তারা বেশি কথা বলবে না। ইউরোপীয় ইউনিয়ন যেমন একটি ইউনিট, তেমন চীনও এক চীন নীতির ওপর দাঁড়িয়ে একটি ইউনিট তৈরি করতে চাইছে। তাইওয়ান তার অংশ। ফলে সেখানে ইউরোপের নাক গলানোর কোনো জায়গা নেই।’

তাইওয়ান প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্র অত্যন্ত সরব। যেভাবে চীন তাইওয়ানকে গ্রাস করার চেষ্টা করছে, তার বিরোধিতা করছে যুক্তরাষ্ট্র। সম্প্রতি তাইওয়ানের রাষ্ট্রপ্রধান যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে কংগ্রেসের স্পিকারের সঙ্গে বৈঠকও করে এসেছেন। এরপরেই তাইওয়ানের সমুদ্র সৈকতের খুব কাছে সামরিক মহড়া শুরু করেছে চীন। এই পরিস্থিতিতে ম্যাক্রোঁর এই বক্তব্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।