তুরস্কের আদালতে কাভালার শাস্তি বহাল

Looks like you've blocked notifications!
ছবি : সংগৃহীত

২০২০ সালে একবার মুক্তি পেয়েছিলেন ওসমান কাভালা৷ কিন্তু কয়েক ঘণ্টার মধ্যে চার বছর আগে অভ্যুত্থান চেষ্টায় জড়িত থাকার অভিযোগে আবার গ্রেপ্তার করা হয় তাকে৷ সেই অভিযোগে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ বহাল রেখেছেন তুরস্কের আদালত৷

৬৫ বছর বয়সি কাভালাকে ২০১৭ সালে প্রথম গ্রেপ্তার করা হয় ২০১৩ সালের সরকারবিরোধী বিক্ষোভে ইন্ধন ও অর্থ সহায়তা দেওয়ার অভিযোগে৷ ২০২০ সালে সেসব অভিযোগ থেকে মুক্তি দিয়ে তাকে কারামুক্তির আদেশ দেয় তুরস্কের আদালত৷ কিন্তু কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তোলা হয় ২০১৬ সালে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়্যিপ এরদোয়ানকে ক্ষমতাচ্যুত করার প্রয়াসে জড়িত থাকার অভিযোগ৷

সংখ্যালঘু অধিকারের সমর্থক, সাংস্কৃতিক বহুত্ববাদে বিশ্বাসী এবং এরদোয়ানের সমালোচক হিসেবে পরিচিত অ্যাক্টিভিস্ট কাভালাকে গত এপ্রিলে সেই মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত৷ রায় প্রত্যাহারের আর্জি জানিয়ে আপিল করা হয়েছিল৷

তুরস্কের সরকারি সংবাদ সংস্থা আনাদোলু জানিয়েছে, বুধবার আগের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ বহাল রেখেছেন আপিল আদালত৷ আপিল আদালত মনে করেন, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ‘আইনের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ’ হয়েছে৷ তবে, এই রায়ের বিরুদ্ধেও সুপ্রিম কোর্টে আপিল করার সুযোগ রয়েছে৷ ওসমান কাভালা শুরু থেকেই সব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন৷

সব অভিযোগকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশপ্রণোদিত’ আখ্যায়িত করে তার মুক্তি দাবি করেছে ইউরোপিয়ান কোর্ট অব হিউম্যান রাইটস (ইসিএইচআর)৷ কিন্তু তুরস্কের দাবি, স্বাধীন বিচারব্যবস্থা স্বাধীনভাবে আইনানুগ রায় দিয়েছেন৷

কাভালার বিরুদ্ধে করা মামলা নিয়ে ২০২১ সালে কানাডা, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, নিউজিল্যান্ড, নরওয়ে, সুইডেন ও আমেরিকার রাষ্ট্রদূতেরা একটি বিবৃতি দেওয়ায় তুরস্কের সঙ্গে ওই দেশগুলোর কূটনৈতিক উত্তেজনা দেখা দিয়েছিল৷

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ইচ্ছাকৃতভাবে বিচার প্রক্রিয়া বিলম্বিত করা হচ্ছে। এর ফলে তুরস্কের বিচারব্যবস্থার স্বচ্ছতা, গণতন্ত্র এবং আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধা আছে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিচ্ছে।’

বিবৃতিতে তুরস্কের প্রতি কাউন্সিল অব ইউরোপের রায় মেনে নেওয়ার আহ্বানও জানানো হয়৷  তুরস্ক ১৯৫০ সাল থেকে মানবাধিকার সংগঠন কাউন্সিল অব ইউরোপের সঙ্গে যুক্ত।

রাষ্ট্রদূতদের ওই বিবৃতির আগে কাউন্সিল অব ইউরোপ জানায়, কাভালাকে মুক্তি না দিলে তুরস্কের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ তুলবে এবং সেই মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তারপরও কাভালাকে মুক্তি দেয়নি তুরস্ক সরকার, বরং বিবৃতি দেওয়া ১০ রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠিয়ে অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ বন্ধ না করলে তাদের বহিষ্কার করার হুমকি দেওয়া হয়৷

গত নভেম্বরে কাভালাকে ‘ডায়লগ অব কালচার’ পুরস্কার দেয় জার্মানির ইনস্টিটিউট ফর ফরেন কালচারাল রিলেশন্স৷