‘ধৈর্য হারিয়েছিলাম’, নববর্ষের রাতের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন পোপ

Looks like you've blocked notifications!

‘আমরা অসংখ্যবার ধৈর্য হারিয়ে ফেলি, আমিও (ধৈর্য) হারাই, গতকালের বাজে উদাহরণের জন্য ক্ষমা চাইছি।’ খ্রিস্টীয় নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাতে আসা এক নারীর হাতে চাপড় মারার জন্য এভাবেই দুঃখ প্রকাশ করেছেন পোপ ফ্রান্সিস।

নতুন বছরের শুরুর লগ্নে ভ্যাটিকান সিটির বাইরে সেন্ট পিটার্স স্কয়ারে জমায়েত হয়েছিলেন হাজার হাজার মানুষ। নববর্ষ উপলক্ষে সর্বসাধারণের সঙ্গে হাত মেলাচ্ছিলেন রোমান ক্যাথলিক চার্চের প্রধান ৮৩ বছরের পোপ ফ্রান্সিস। তরুণ-তরুণী, বয়স্ক-শিশু, যার সঙ্গে পেরেছেন তার সঙ্গেই হাত মিলিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করছিলেন পোপ। তবে অবশ্যই সামনে ছিল ব্যারিকেড। অর্থাৎ পোপকে হাত দিয়েই কেবল স্পর্শ করা যাবে, এর বেশি কিছু নয়। আর তারপরও কিছু হলে পোপের নিরাপত্তাকর্মীরা তো আছেনই। কিন্তু এত কিছুর মধ্যেই ঘটে অঘটন। মেজাজ হারান স্বয়ং পোপ ফ্রান্সিস! মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এ খবর জানিয়েছে।

খ্রিস্টীয় নববর্ষের প্রথম প্রহরে ভ্যাটিক্যান সিটির বাইরে সেন্ট পিটার্স স্কয়ারে ওই ঘটনা ঘটে। নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানাতে আগতদের পোপ ফ্রান্সিসও শুভেচ্ছা জানাচ্ছিলেন। হাত মিলিয়ে অভিনন্দন জানাচ্ছিলেন অনুগামীদের। একটি শিশুর সঙ্গে হাত মেলানোর পরেই পোপ ফ্রান্সিস চলে যাচ্ছিলেন। পোপের জন্য অপেক্ষারত একজন নারীর প্রায় কাছাকাছি এসেই হাত মেলানো বন্ধ করে চলে যেতে উদ্যত হন পোপ। তখনই পোপের হাত ধরে টান মারেন ওই তরুণী। এতেই বিরক্ত হন পোপ। মেয়েটির হাতের টানের পোপ অল্পের জন্য পড়ে যাননি। পোপ আশীর্বাদ করার পরেও হাত ছাড়তে চাইছিলেন না ওই নারী। বাধ্য হয়েই হাত ছাড়াতে ওই নারীর হাতে কয়েকটি থাপ্পড় মারেন পোপ ফ্রান্সিস। মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে যায় ওই ঘটনার ভিডিও। পোপের মুখে বিরক্তি দেখে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয় বিতর্ক। পরে ওই ঘটনা প্রসঙ্গে পোপ বলেন, ‘গতকালের বাজে উদাহরণের জন্য আমি দুঃখিত।’

একই দিন সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকায় নারী নির্যাতন নিয়ে নিজের মতামত তুলে ধরেন রোমান ক্যাথলিক চার্চের প্রধান। পোপ ফ্রান্সিস বলেন, ‘নারী শরীরের অবমাননা এখন সর্বত্র। নারী নির্যাতন ঈশ্বরের কাছে অপবিত্র। বিজ্ঞাপন, পর্নোগ্রাফিতে নারী শরীরকে ভোগ্যপণ্য করে বেচা হচ্ছে। নারী ভোগের বস্তু নয়, সম্মানের; এটা আমাদের সবার মনে রাখা উচিত।’ ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াল এ খবর জানিয়েছে।

পোপ আরো বলেন, ‘নারীদের দ্বিতীয় শ্রেণির মানুষ মনে করার প্রবণতার মধ্যেই এ ধরনের নির্যাতন ও হেনস্তার শিকড় প্রোথিত রয়েছে। নারীরাই সৃজন করেন, অথচ তাঁদেরই ধর্ষণ, অত্যাচার, দেহব্যবসার মতো ঘৃণ্য, নারকীয় নির্যাতনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। নারীরা সম্মান না পেলে সমাজ অন্ধকারে ঢেকে যাবে।’