মিয়ানমার থেকে মুক্তি পেয়েই দেশের পথে বিদেশিরা
চারজন বিদেশি বন্দিসহ ছয় হাজার বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে মিয়ানমারের সেনা সরকার। বলা হয়েছে, তাদের সবার দোষ ক্ষমা করা হয়েছে। এই ছয় হাজার বন্দিই রাজনৈতিক কারণে আটক ছিলেন মিয়ানমারের জেলে। চারজন বিদেশি বন্দিই হাইপ্রোফাইলের। একজন যুক্তরাজ্যের সাবেক রাষ্ট্রদূত। তাকে মুক্তি দিলেও তার স্বামী এখনো জেলে বন্দি। তবে, মিয়ানমারের সরকার জানিয়েছে, রাষ্ট্রদূতের স্বামীকেও দ্রুত মুক্তি দেওয়া হবে। এ ছাড়া অং সান সু চির অর্থনৈতিক পরামর্শদাতা এক অস্ট্রেলিয়ান নাগরিককে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। মুক্তি পেয়েছেন জাপানের এক সাংবাদিক তথা চিত্র পরিচালক এবং অ্যামেরিকার এক বোটানিস্ট বা উদ্ভিদ বিজ্ঞানী।
বৃহস্পতিবার ছাড়া পেয়েই থাইল্যান্ডে পৌঁছান মিয়ানমার থেকে সদ্য মুক্তি পাওয়া বিদেশি বন্দিরা। সেখান থেকে তারা নিজের নিজের দেশের পথে রওনা হন।
যুক্তরাজ্যের সাবেক রাষ্ট্রদূত ভিকি বোম্যান সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে চাননি। তার স্বামী এখনো জেলে বন্দি। তবে সেনা শাসক জানিয়েছে, দ্রুত তাকেও মুক্তি দেওয়া হবে। এই দুই যুক্তরাজ্যের নাগরিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তারা মিয়ানমারে বাড়ি বদলালেও ঠিকানার রেজিস্ট্রেশনে ঠিকানা বদল করেননি।
সেনা অভ্যুত্থানের কয়েকমাসের মধ্যেই তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। জেলে তার সঙ্গে কেমন ব্যবহার করা হয়েছে, এবিষয়ে একটি শব্দও উচ্চারণ করেননি বোম্যান।
সু চি গ্রেপ্তার হওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই গ্রেপ্তার হন তার অর্থনৈতিক উপদেষ্টা সিন টার্নেল। অস্ট্রেলিয়ার এই অর্থনীতিবিদ সব মিলিয়ে ৬৫০ দিন বন্দি ছিলেন। তার সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী একটি ছবি তুলে পোস্ট করেছেন।
টার্নেল জানিয়েছেন, দিন গুনতেন তিনি। জানতেন, একদিন তার মুক্তি হবে। খুব বড়সড় চেহারার মানুষ নন টার্নেল। জেলে থেকে তার স্বাস্থ্য সম্পূর্ণ ভেঙে গেছে। টার্নেল অবশ্য জানিয়েছেন, শারীরিকভাবে খানিকটা বিধ্বস্ত হলেও মানসিকভাবে তিনি সুস্থ আছেন।
দেশে ফিরে গেছেন জাপানের সাংবাদিক তথা ফিল্মমেকার কুবোতা। টোকিও পৌঁছে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি ধন্যবাদ জানিয়েছেন সেনা সরকারকে তাকে মুক্তি দেওয়ার জন্য।
সব মিলিয়ে চারজন বিদেশি সাংবাদিককে আটক করেছিল মিয়ানমার। তাদের সবাইকে মুক্তি দেওয়া হলো।
কুবোতা অবশ্য তার জেলের জীবন নিয়ে খুব বেশি কথা বলেননি, বরং তিনি ধন্যবাদ দিয়েছেন গণমাধ্যম এবং তার দেশের সরকারকে। তার দাবি, তারা দীর্ঘদিন ধরে কুবোতার জন্য সওয়াল করেছেন বলেই আজ তিনি মুক্তি পেয়েছেন।
রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দেওয়ার জন্য অনেকদিন ধরেই মিয়ানমারের সেনা সরকারের ওপর চাপ দেওয়া হচ্ছিল। তারা প্রায় দশ হাজার রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে বন্দি করেছেন। তাদের মধ্য থেকেই ছয় হাজার বন্দিকে মঙ্গলবার মুক্তি দেওয়া হয়েছে।