যুক্তরাষ্ট্রে নিষেধাজ্ঞার মুখে চীনের ৪ এয়ারলাইনস

এবার উড়োজাহাজ চলাচল নিয়ে চীনের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়াল যুক্তরাষ্ট্র। চীন থেকে আবারও যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ পরিষেবা শুরু করতে চায় মার্কিন এয়ালাইনস সংস্থাগুলো। এ অনুমতি চেয়ে চীন সরকারের কাছে আবেদনও করেছিল তারা। কিন্তু চীনের পক্ষ থেকে এখনো কোনো সবুজ সংকেত মেলেনি। এর পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে চীনের চার এয়ারলাইসকে যুক্তরাষ্ট্রে যাত্রী পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা দিতে যাচ্ছে মার্কিন পরিবহন বিভাগ। এর ফলে দুদেশের মধ্যে উত্তেজনা আরো বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
আগামী ১৬ জুন থেকে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে মার্কিন পরিবহন দপ্তর। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অনুমতি পেলেই কার্যকর হয়ে যাবে সে নিষেধাজ্ঞা।
মার্কিন পরিবহন দপ্তর জানিয়েছে, গত ১ জুন থেকে যাত্রী পরিবহন শুরুর আবেদন করেছিল মার্কিন বিমান সংস্থাগুলো। কিন্তু তাদের সে আবেদনে সাড়া দিতে ব্যর্থ হয়েছে চীন সরকার। দুই দেশের মধ্যে যে বিমান পরিবহন চুক্তি আছে, এ ঘটনা সে চুক্তির পরিপন্থী।
এর জের হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে কোনো চীনা ফ্লাইট নামতে পারবে না আপাতত। চীনের সঙ্গে যাবতীয় বিমান পরিষেবায় আপাতত নিষেধাজ্ঞা জারি করতে যাচ্ছে ট্রাম্প সরকার। এর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আজ বৃহস্পতিবার হবে বলে জানা গেছে।
আরো জানা গেছে, এয়ার চায়না , চায়না ইস্টার্ন এয়ারলাইনস, চায়না সাউথার্ন এয়ারলাইন্স, হাইনান এয়ারলাইনসের ওপর নিষেধাজ্ঞা আসতে যাচ্ছে।
বিমান চলাচলে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে এ বিরোধটি শুরু হয় মূলত গত ২৬ মার্চ থেকে। সে সময় চীন সরকার মাসের প্রথমের দিকে বিদেশি বিমানের জন্য সপ্তাহে একটি ফ্লাইট চালু করার কথা বলে। কিন্তু তখন থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলাচলকারী তিনটি মার্কিন এয়ারলাইনস সংস্থাই নভেল করোনাভাইরাসজনিত মহামারির কারণে তাদের পরিষেবা বন্ধ করে দেয়। ফলে চীন সরকার তখন দুই দেশের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেয়। কিন্তু উল্টো দিকে. চীনের এয়ারলাইনস সংস্থাগুলোর ফ্লাইট যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে চলাচল অব্যাহত রেখেছিল।
ডেল্টা এয়ারলাইনস ও ইউনাইটেড এয়ারলাইনস চলতি মাসে চীনে আবারও ফ্লাইট শুরু করার আশা করেছিল। উভয় সংস্থা চীনের সিভিল অ্যাভিয়েশন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করলেও কোনো সাড়া পায়নি।
এর আগে গত ১৪ মে মার্কিন পরিবহন বিভাগ মার্কিন ফ্লাইটগুলো দুই দেশের মধ্যে চালু করতে অনুমতি দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করে। সে সময় যুক্তরাষ্ট্র দাবি করেছিল, চীন ১৯৮০ সালের একটি চুক্তি লঙ্ঘন করছে। চুক্তি অনুযায়ী, দুই দেশের মধ্যে ফ্লাইট পরিচালনা করতে দেশি ও বিদেশি এয়ারলাইনসকে সমান সুযোগ দেওয়া হবে।
নানা ইস্যুতে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তাপ ক্রমেই বাড়ছে। নভেল করোনাভাইরাসজনিত পরিস্থিতির দায় নিয়ে দুদেশের তিক্ততা চরমে পৌঁছায়। বিশ্বজুড়ে নভেল করোনাভাইরাস এমন ভয়াবহ আকার নেওয়ার জন্য সরাসরি চীনকে দায়ী করেন ট্রাম্প। কড়া ভাষায় যার জবাব দেয় চীন। এর মধ্যে বিমান পরিষেবা চালু করা নিয়ে দুদেশের সংকটে নয়া মাত্রা যুক্ত হলো।