শ্বাসরোধেই মৃত্যু জর্জ ফ্লয়েডের : ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন

এমন আশঙ্কা আগেই ছিল। সে আশঙ্কাই সত্যি হলো। ঘাড়ে হাঁটুর চাপে শ্বাসরোধ হয়ে মারা গেছেন জর্জ ফ্লয়েড। পুলিশের হাতে যুক্তরাষ্ট্রে নিহত কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের পরিবারের পক্ষ থেকে নিয়োগ দেওয়া একটি প্রতিষ্ঠানের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফ্লয়েডের গলা ও ঘাড়ে চাপ প্রয়োগ করায় তিনি শ্বাসকষ্টে মারা যান। ফ্লয়েডের দেহে আগের কোনো শারীরিক অসুস্থতার কথা জানা যায়নি। সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া এ খবর জানিয়েছে।
ফ্লয়েডের মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালনও বন্ধ হয়ে গিয়েছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে পরিবারের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়েছে, ক্রমাগত হাঁটুর চাপে ঘাড়ে ও পিঠে সংকোচনের কারণে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা গেছেন আফ্রিকান-আমেরিকান জর্জ ফ্লয়েড। মিনিয়াপোলিসের পুলিশ কর্মকর্তা ডেরেক চাওভিন নিরস্ত্র ফ্লয়েডকে মাটিতে ফেলে হাঁটু দিয়ে ঘাড় চেপে ধরেন। আট মিনিটের বেশি সময় এভাবে হাঁটুর চাপে শ্বাসরোধে মৃত্যু হয় ফ্লয়েডের। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের উল্লেখ করে গতকাল সোমবার এমনটাই জানিয়েছেন জর্জ ফ্লয়েডের পরিবারের আইনজীবী বেন ক্রাম্প।
ওই আইনজীবী জানান, ঘাড়ের ওপর ক্রমাগত হাঁটুর চাপ পড়ায়, ফ্লয়েডের মস্তিষ্কে রক্ত যাওয়ার পথ বন্ধ হয়ে যায়। তার ওপর পুলিশ কর্মকর্তার ভারী ওজনের কারণে শ্বাস নেওয়া জর্জের পক্ষে কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়। পরিবারের পক্ষ থেকে আলাদা করে এ ময়নাতদন্ত করানো হয়েছিল। সরকারি ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের সঙ্গে এ প্রতিবেদনের মিল নেই।
পুলিশ অফিসার ডেরেক চাওভিনের হাঁটুর চাপে ফ্লয়েডের মৃত্যু হওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে নরহত্যার অভিযোগ দায়ের হয়। এ ছাড়া আরো তিন পুলিশ কর্মকর্তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হলেও তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো ধারা দেওয়া হয়নি।
জর্জের পরিবারের আইনজীবী জানান, বাকি তিন পুলিশ কর্মকর্তাকেও গ্রেপ্তার করার দাবি জানানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে মূল অভিযুক্ত ডেরেকের বিরুদ্ধে এবার ফার্স্ট ডিগ্রি মার্ডারের অভিযোগ আনার প্রস্তুতি চলেছে।
হাতে হাতকড়া বাঁধা অবস্থায় গত সোমবার জর্জ ফ্লয়েডের ওপর অত্যাচার চালান ওই চার পুলিশ কর্মকর্তা। ওই কৃষ্ণাঙ্গ বারবার বাঁচার আকুতি জানালেও তা উপেক্ষা করেন ডেরেক। মাটিতে চেপে ধরা ঘাড় থেকে হাঁটু সরাননি তিনি। লোকজনের স্মার্টফোনের মাধ্যমে মিনিয়াপোলিসে পুলিশি অত্যাচারের সে ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দানা বাঁধে তুমুল বিক্ষোভ। ক্রমে তা ছড়িয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বড় শহরগুলোতে।
ফ্লয়েডের আইনজীবী বেন ক্রাম্প বলেন, ‘স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের ওপর ভরসা নেই। ময়নাতদন্তের সরকারি প্রতিবেদন নিয়ে সন্দেহ ছিল। যে কারণ জর্জের পরিবারকে আলাদা করে ময়নাতদন্ত করানোর কথা বলেছিলাম।’