নেশাদ্রব্যে মৃত্যুহার কমাতে সফল উন্মুক্ত নীতি

Looks like you've blocked notifications!

নেশাদ্রব্য অধিক ব্যবহারের কারণে মৃত্যু হয়েছে এমন সংখ্যা বিশ্বের অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় নেদারল্যান্ডসে সবচেয়ে কম। কিন্তু মজার বিষয় হলো পর্তুগালে নেশাদ্রব্য ব্যবহারে তেমন কোনো কড়াকড়ি নেই। 

১৪ বছর আগে বিতর্কিত একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল পর্তুগাল। দেশটিতে নেশাদ্রব্য ব্যবহারকে অপরাধের পর্যায় থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। আপাতদৃষ্টিতে সিদ্ধান্তটি নিয়ে নানা মহলে বিতর্ক দেখা গেলেও বর্তমানে এর ইতিবাচক ফল মিলছে। দেশটিতে বর্তমানে নেশাদ্রব্য বেশি ব্যবহারের কারণে মৃত্যুহার কমে বিশ্বের সর্বনিম্নে দাঁড়িয়েছে। 

যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম ‘ইনডিপেনডেন্ট’-এর একটি প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, ২০০১ সালে পর্তুগালে নেশাদ্রব্য ব্যবহার অপরাধ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। নেশাদ্রব্য ব্যবহারকারীকে কারদণ্ড ও অপরাধী হিসেবে গণ্য না করা হলেও নেশাদ্রব্য ব্যবহারকে অবৈধ হিসেবে রাখা হয়। আর নেশাদ্রব্য ব্যবহারকে স্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে দেখার সিদ্ধান্ত হয়। গাঁজা, কোকেন, হেরোইনের মতো নেশাদ্রব্য সামান্য পরিমাণে কোনো ব্যক্তির কাছে পাওয়া গেলের তাঁকে অল্প কিছু অর্থ জরিমানা করা হয়। কিছু ক্ষেত্রে নেশাদ্রব্য ব্যবহারকারীদের সামাজিক কল্যাণমূলক কোনো কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। 

বর্তমানে পর্তুগালের প্রতিম ১০ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির মধ্যে নেশাদ্রব্য বেশি ব্যবহারের কারণে মৃত্যুর সংখ্যা মাত্র তিনজন। প্রতি ১০ লাখে নেদারল্যান্ডসে এই সংখ্যা ১০ দশমিক ২, যুক্তরাজ্যে ৪৪ দশমিক ৬, ইস্তোনিয়ায় ১২৬ দশমিক ৮। আর পুরো ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর মধ্যে গড়ে প্রতি ১০ লাখ পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তির ১৭ দশমিক ৩ জন নেশাদ্রব্য অধিক পরিমাণ ব্যবহারের কারণে মারা যান।
 
নেশাদ্রব্য ব্যবহারের কারণে মৃত্যু হয়েছে এমন তথ্য থাকা দেশগুলোর মধ্যে পর্তুগালেই এতে মৃত্যুর হার সবচেয়ে কম। 

যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ কয়েকটি অঙ্গরাজ্যের মতো অনেক দেশেই বিশেষভাবে উৎপাদিত নেশাদ্রব্যের বৈধতা দেওয়া হয়েছে। তবে এসব দেশের চেয়েও পর্তুগালে নেশাদ্রব্যে অধিক ব্যবহারের মৃত্যুহার কম। বিশেষজ্ঞদের মতে, সাধারণত নেশায় আসক্তরা বিশেষভাবে উৎপাদিত নেশাদ্রব্য বেশি ব্যবহার করেন। আর বিশেষ নেশাদ্রব্য অধিক পরিমাণে ব্যবহারে প্রকৃত নেশাদ্রব্যের চেয়ে বেশি ক্ষতিকর। তবে পর্তুগালে বিশেষ প্রক্রিয়ায় উৎপাদিত নেশাদ্রব্য খুব একটা দেখা যায় না। কারণ সেখানে প্রকৃত নেশাদ্রব্য পাওয়ায় বিশেষ প্রক্রিয়ায় উৎপাদিত নেশাদ্রব্যের মানুষের কোনো আগ্রহ নেই। 

বিশেষজ্ঞরা স্বীকার করেন, নেশাদ্রব্য ব্যবহারে মৃত্যুর জন্য অনেক বিষয় দায়ী। ব্যবহারকারীর স্বাস্থ্যগত অবস্থাসহ অনেক বিষয় এখানে যুক্ত। 

নেশাদ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণবিষয়ক পর্তুগালের সরকারি সংস্থা জানিয়েছে, প্রকৃত পক্ষে দেশটির বিশেষ কিছু অঞ্চলে নেশাদ্রব্য ব্যবহার কমেছে। আর নেশার কারণে এইডসসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্তের হার কমেছে যার প্রভাব পড়েছে নেশাদ্রব্য ব্যবহারজনিত মৃত্যুহারে।