বিশ্বে সবচেয়ে বেশি যানজটের শহর
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2015/02/10/photo-1423551531.jpg)
যানজটে নাকাল ঢাকাবাসী। ঢাকার মতো বিশ্বের অনেক শহরে এটি ভয়াবহ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই যেমন বিশ্বের সবচেয়ে বেশি যানজটের শহরের খেতাব পেয়েছে ইন্দোনেশিয়ার রাজধানীর জাকার্তা। আর ফিনল্যান্ডের টামপারায় জট সবচেয়ে কম। লুব্রিকেন্ট নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ক্যাস্ট্রলের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
সমীক্ষায় বলা হয়, যানজটের কারণে জাকার্তায় একজন চালককে প্রতিবছর গড়ে ৩৩ হাজার ২৪০ বার থামতে হয়। এই হিসাব অনুযায়ী, জাকার্তার সব গাড়ি মোট চলার সময়ের ২৭ দশমিক ২২ শতাংশ ক্ষেত্রে জটে পড়ে থাকে। যানজটে নাকাল বিশ্বের দ্বিতীয় শহর তুরস্কের ইস্তাম্বুল।
টমটম নেভিগেশন সিস্টেম ব্যবহার হওয়ার ৭৮টি দেশের বিভিন্ন শহরের যানজটের চিত্র নিয়ে ক্যাস্ট্রল সমীক্ষা চালায়। টমটম নেভিগেশন সিস্টেমে কোনো গাড়ির চলার সব ধরনের তথ্য ইন্টারনেটে সংরক্ষিত হয়।
ক্যাস্ট্রলের সমীক্ষায় বাংলাদেশের ঢাকাসহ অনেক শহরই বাদ পড়েছে, যার একটি ফিলিপাইনের ম্যানিলা। জাপানের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা জাইকার তথ্যমতে, ম্যানিলা শহরের যানজটের কারণে ফিলিপাইনের জাতীয় আয়ে ২৪০ কোটি মার্কিন ডলায় লোকসান হয়।
বিশ্বে যানজট পরিস্থিতির সবচেয়ে খারাপ ১০টি শহর হলো :
জাকার্তা, ইন্দোনেশিয়া (বছরে একটি গাড়ি ৩৩,২৪০ বার জটে পড়ে)
ইস্তাম্বুল, তুরস্ক (৩২,৫২০)
মেক্সিকো সিটি, মেক্সিকো (৩০,৮৪০)
ছুরাবায়া, ইন্দোনেশিয়া (২৯,৮৮০)
সেন্ট পিটার্সবার্গ, রাশিয়া (২৯,০৪০)
মস্কো, রাশিয়া (২৮,৬৮০)
রোম, ইতালি (২৮,৬৮০)
ব্যাংকক, থাইল্যান্ড (২৭,৪৮০)
গুয়াডালাখারা, মেক্সিকো (২৪,৮৪০)
বুয়েনস আইরেস, আর্জেন্টিনা (২৩,৭৬০)
বিশ্বের সবচেয়ে কম যানজটের শহরগুলো অধিকাংশই ইউরোপের। সবচেয়ে কম জটের শহরগুলো হলো :
টামপারা, ফিনল্যান্ড (বছরে ৬,২৪০ বার জ্যামে পড়ে)
রটারড্যাম, নেদারল্যান্ডস (৬,৩৬০)
আবুধাবি, সংযুক্ত আরব আমিরাত (৬,৮৪০)
ব্রাতিসলাভা, স্লোভাকিয়া (৬,৮৪০)
ব্রিসবেন, অস্ট্রেলিয়া (৬,৯৬০)
অ্যান্টোয়ার্প, বেলজিয়াম (৭,০৮০)
পোর্টো, পর্তুগাল (৭,২০০)
ব্রেনো, চেক রিপাবলিক (৭,৩২০)
কোপেনহেগেন, ডেনমার্ক (৭,৪৪০)
কোসিয়ে, স্লোভাকিয়া (৭,৪৪০)
সমীক্ষায় দেখা যায়, সারা বিশ্বে প্রতি সপ্তাহে গড়ে একজন চালক ৩৬০ বার যানজটে পড়েন। এ সময় অলস বসে থাকা ছাড়া কিছু করার থাকে না। শহরে মানুষের কর্মঘণ্টাও নষ্ট হয়। একই সঙ্গে ঘটে পরিবেশদূষণ ও জ্বালানি অপচয়। গাড়ির ইঞ্জিনেরও ক্ষতি হয়।
২০০৮ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক হিসাব অনুযায়ী, বিশ্বের অনেক শহরের বায়ুদূষণের অন্যতম কারণ গাড়ি থেকে নির্গত ধোঁয়া। এর মধ্যে ঢাকাসহ দক্ষিণ এশিয়ার অনেক শহরই আছে।
যানজটের কারণে ক্ষেত্রবিশেষ যাতায়াতের ব্যয়ও বাড়ছে। জাইকার সমীক্ষায় জানা গেছে, ম্যানিলা শহরবাসীর যাতায়াত ২০ শতাংশ বেড়েছে। ২০৩০ সালে বিশ্বে ট্রাফিক জ্যাম ১৩ শতাংশ বাড়বে। এ সময় ব্যয় বাড়বে আড়াই গুণ।
ট্রাফিক জ্যাম ও এতে সৃষ্ট সমস্যা নিরসনে জাইকার পক্ষ থেকে কিছু প্রস্তাব করা হয়েছে।
অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড দেশের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে দেওয়া। একই সঙ্গে কৃষির মূল এলাকাগুলো এর মুক্ত রাখা। শহরের ঘিঞ্জি এলাকা এড়িয়ে চলা। স্থানীয়ভাবে পণ্য বিক্রির ব্যবস্থা করা। এতে যাতায়াত কমে।
চলাচলে বিভিন্ন মাধ্যমের ওপর গুরুত্ব দেওয়া। সড়কপথের পাশাপাশি ট্রেন ও অন্য যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটানো।
কর্মক্ষেত্রের কাছেই আবাসন ব্যবস্থা করা। এতে যাতায়াত কমে।
শহরে সরকারি পরিবহন ও যোগাযোগব্যবস্থা বাড়ানো এবং ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়ন।