মৌলভির ইনাম পেতে জুতার মালাও পরতে হবে সোনুকে
শুধু মাথা কামালেই হবে না, ১০ লাখ রুপির ইনাম পেতে সোনুকে পূরণ করতে হবে আরো দুই শর্ত। সেই শর্ত দুটির কথা নাকি আগেই ঘোষণা করেছিলেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সংখ্যালঘু ইউনাইটেড কাউন্সিলের সহসভাপতি মৌলভি সৈয়দ শাহ আতেফ আলি আল কাদেরি।
কী সেই দুই শর্ত? সংবাদ সংস্থা এএনআইকে কাদরি বলেন, ‘আমি তো তিনটি শর্তের কথা বলেছিলাম। এর মধ্যে একটি পূরণ হয়েছে। ইনাম পেতে হলে সোনুকে গলায় একজোড়া পুরোনো ছেঁড়া জুতার মালা পরে তার পর গোটা দেশ ঘুরতে হবে।
মসজিদের আজানে ঘুম ভেঙে যাওয়ার প্রতিবাদ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যিনি ঝড় তুলেছেন, সেই বলিউড গায়ক সোনু নিগম তাঁর বিরুদ্ধে জারি করা ফতোয়ার প্রতিবাদে নিজের মাথার চুল কামিয়ে ফেলেছেন।
গতকাল বুধবার এ ঘটনার আগে সৈয়দ শাহ আতেফ আলি আল কাদেরি ঘোষণা করেছিলেন, যে সোনু নিগমের মাথা কামিয়ে পুরোনো জুতোর মালা তাঁর গলায় ঝুলিয়ে সারা ভারত ঘোরাতে পারবে, তাঁকে তিনি ১০ লাখ রুপির ইনাম দেবেন।
সেই খবর চোখে পড়ার পর বুধবার সকালে সোনু নিগম নিজেই আবার টুইট করেন, ‘আজ দুপুর ২টায় আলিম আমার বাড়িতে এসে মাথা কামিয়ে দেবেন। মৌলভি, তোমার ১০ লাখ তৈরি রাখো।’ সেই মাথা কামানোর ঘটনা দেখার জন্য সংবাদমাধ্যমকেও বাড়িতে আসার আমন্ত্রণ জানান তিনি।
ঠিক দুপুর ২টায় আলিম হাকিম আসেন সোনু নিগমের মুম্বাইয়ের বাড়িতে এবং মিডিয়ার ক্যামেরার সামনেই তাঁকে পুরো ন্যাড়া করে দেন। সোনু নিগম তখন বলেন, ‘মাথা কামানো মানে কোনো চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়া বা নেগেটিভিটির বার্তা দেওয়া নয়।’
‘কিন্তু এটা অবশ্যই একটা প্রতীকী পদক্ষেপ, যার মাধ্যমে আমি বলতে চাইছি—দেশটাকে আপনারা কোথায় নিয়ে যেতে চাইছেন? এই সব ফতোয়ার অর্থ কী?’, যোগ করেন বলিউড গায়ক।
সাংবাদিক বৈঠকে সোনু বলেন, ‘আমি সমস্ত ধর্মকেই সম্মান করি, প্রত্যেকের বিশ্বাসকেই মর্যাদা দিতে জানি। আমি কোনো বিশেষ ধর্মের বিরুদ্ধে কথা বলিনি।’ তারপরই তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে তাঁর সম্পূর্ণ মতপ্রকাশের অধিকার আছে। আর আজান নিয়ে তিনি যেটা বলেছিলেন, সেটা সামাজিক ব্যাপার, ধর্মীয় বিষয় নয়।
এর আগে সোমবার ভোররাতে লাউডস্পিকারে আজানের আওয়াজে তাঁর ঘুম ভেঙে যাওয়ার পর সোনু নিগম যে টুইট করেন, তা নিয়ে সারা ভারতে তোলপাড় শুরু হয়।
টুইটে তিনি লেখেন, ‘আমি মুসলিম না। তাহলে কেন আজানের শব্দে আমার ঘুম ভাঙানো হবে?’
এরপর সোনু নিগম মসজিদে মাইক ব্যবহারের বিরুদ্ধেও কিছু মন্তব্য করে একে ‘ধর্মবোধ জোর করে চাপিয়ে দেওয়া’ বলে বর্ণনা করেন। তবে সোনু নিগম শুধু আজানের বিরুদ্ধেই টুইট করেননি। তিনি মন্দির ও গুরুদুয়ারাতেও লাউডস্পিকারের শব্দ দুষণের বিরুদ্ধে মন্তব্য করেন।
এ মন্তব্যের পর টুইটারে সোনু নিগমের পক্ষে-বিপক্ষে শুরু হয় জোর বিতর্ক। অনেকেই তাঁকে ‘মুসলমানবিরোধী’ বলে বর্ণনা করেন।
আবার অনেকেই বলেন, সোনু নিগম ইসলামের বিরুদ্ধে কোনো কথা বলেননি। তিনি শুধু মসজিদে মাইক ব্যবহারের বিপক্ষে মন্তব্য করেছেন।