বড় পরমাণু বোমা বহনে সক্ষম উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র

Looks like you've blocked notifications!
উত্তর কোরিয়ার পিয়ংগান প্রদেশের কুসং শহর থেকে পরীক্ষামূলকভাবে একটি নতুন ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়। এটি বড় ধরনের পারমাণবিক বোমা বহনে সক্ষম বলে দাবি করা হয়েছে দেশটির পক্ষ থেকে। ছবি : বিবিসি

পরীক্ষামূলকভাবে ছোড়া উত্তর কোরিয়ার নতুন ক্ষেপণাস্ত্রটি বড় ধরনের পারমাণবিক বোমা বহনে সক্ষম বলে দাবি করা হয়েছে দেশটির পক্ষ থেকে। গতকাল রোববার সকালে পিয়ংগান প্রদেশের কুসং শহর থেকে ওই ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়।

স্থানীয় সময় আজ সোমবার এই দাবি করে উত্তর কোরিয়া। এ পরীক্ষার মধ্য দিয়ে নতুন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়নের সক্ষমতা অর্জন করেছে বলে জানিয়েছে তারা। 

উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা কেসিএনএ জানায়, রোববার ছোড়া ওই ক্ষেপণাস্ত্রটির নাম ‘হোয়াসং-১২’।  পরিকল্পনা অনুযায়ী সেটি কাজ করেছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

কেসিএনের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘নতুন ক্ষেপণাস্ত্রটির কৌশলগত ও প্রযুক্তিগত বৈশিষ্ট্য পরীক্ষার জন্য ছোড়া হয়। সেটি বড় পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম।’ 

জাপানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ক্ষেপণাস্ত্রটি এক হাজার ২৪৫ মাইল উচ্চতায় পৌঁছে যায়। পরে ৭০০ কিলোমিটার অতিক্রম করে সেটি জাপান সাগরে গিয়ে পড়ে। 

ক্ষেপণাস্ত্রটি ছোড়ার পরপরই জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক ডেকেছে জাতিসংঘ ও জাপান। আগামী মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হবে জরুরি ওই বৈঠক।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রশান্ত মহাসাগরীয় কমান্ডের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ক্ষেপণাস্ত্রটির ধরন খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে এটি আন্তমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) নয়।

আইসিবিএম কোরিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আঘাত হানতে সক্ষম। 

বিশ্লেষকদের ধারণা, দুই ধরনের আইসিবিএম বানাতে কাজ করছে উত্তর কোরিয়া। তবে ওই দুই দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র এখনো পরীক্ষার জন্য ছোড়া হয়নি। 

এদিকে, কয়েক দিন হলো ক্ষমতায় বসেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার নতুন প্রেসিডেন্ট মুন জাই-ইন। তাঁর ক্ষমতায় বসার পর পরই এ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা দেশ দুটির মধ্যে উত্তেজনা আরো বৃদ্ধি করবে বলে মনে করছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা। 

এর আগে গত মাসে দক্ষিণ পিয়ংইয়ংয়ের একটি এলাকায় ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালানো হয়। তবে সেটি কোরিয়ার সীমান্ত পার করার আগেই আকাশে বিস্ফোরিত হয়। 

এ ছাড়া জাপান সাগরে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে উত্তর কোরিয়া। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের বৈঠকের ঠিক আগমুহূর্তে ওই ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়।

মার্চে জাপান সাগরের দিকে চারটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে উত্তর কোরিয়া। ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর মধ্যে তিনটি জাপানের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে পড়ে। এর আগে ফেব্রুয়ারিতে পিয়ংগান প্রদেশে অবস্থিত বাঙ্গিয়ন বিমানঘাঁটি থেকে জাপান সাগরের দিকে পরীক্ষামূলকভাবে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে উত্তর কোরিয়া। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর সেটিই ছিল দেশটির প্রথম ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন জানিয়েছিলেন, খুব তাড়াতাড়ি পরমাণু বোমা বহনে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালাতে যাচ্ছেন তাঁরা।

গত বছর বেশ কয়েকবার পারমাণবিক বোমার পরীক্ষামূলক বিস্ফোরণ ঘটায় উত্তর কোরিয়া। পরমাণু অস্ত্র ও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার জেরে ২০০৬ সাল থেকেই উত্তর কোরিয়ার ওপর বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে জাতিসংঘ।