রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিশ্বনেতাদের স্ত্রীদের চিঠি তুরস্কের ফার্স্ট লেডির

Looks like you've blocked notifications!
রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়াতে বিশ্বনেতাদের স্ত্রীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তুরস্কের ফার্স্ট লেডি এমিনে এরদোয়ান। পুরোনো ছবি

মিয়ানমারে সহিংসতার শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়াতে বিশ্বনেতাদের স্ত্রীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তুরস্কের ফার্স্ট লেডি এমিনে এরদোয়ান।

গত শনিবার এক চিঠিতে এ আহ্বান জানান প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের স্ত্রী।

বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের নেতার স্ত্রীদের উদ্দেশে এমিনে এরদোয়ান বলেন, ‘আমরা যাঁরা বিশ্বনেতাদের স্ত্রী, তাঁরা সত্যিই অনেক মানবিক হতে পারি। ইতিবাচক মনোভঙ্গি নিয়ে আমরা অসহায় রোহিঙ্গাদের সাহায্যে এগিয়ে আসতে পারি, যা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে রোহিঙ্গাদের মানবিক সাহায্যে এগিয়ে আসতে উদ্বুদ্ধ করবে।’

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, এরই মধ্যে মিয়ানমারে রাষ্ট্রীয় সহিংসতার শিকার হয়ে বাংলাদেশে আসা অসহায় রোহিঙ্গাদের বিষয়টি বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে তুরস্ক।

মিয়ানমারে রাষ্ট্রীয় খুন, ধর্ষণ, নির্যাতন ও সহিংসতার শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের দেখতে গত ৭ সেপ্টেম্বর কক্সবাজারে যান তুরস্কের ফার্স্ট লেডি এমিনে এরদোয়ান। সে সময় তিনি বিপদগ্রস্ত রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলেন; শোনেন তাদের করুণ পরিণতির গল্প। সে সময় তিনি রোহিঙ্গাদের মধ্যে মানবিক সাহায্যও বিতরণ করেন।

চিঠিতে এমিনে আরো বলেন, ‘একজন মা, একজন নারী ও একজন মানুষ হিসেবে আমি মনে করি, এমন এক মানবিক পৃথিবী প্রতিষ্ঠা করতে হবে, যেখানে সবাই মিলেমিশে থাকবে। যেখানে থাকবে না কোনো জাতিগত কিংবা ধর্মীয় বৈষম্য।’

বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শনের কথা স্মরণ করে এরদোয়ানের স্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ সীমান্তে গিয়ে আমি রোহিঙ্গা নারীদের গল্প শুনেছি। ওই নারীরা বলেছে, তাদের চোখের সামনে স্বামী-সন্তানকে মিয়ানমার সেনারা হত্যা করেছে। বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়েছে। এই করুণ কাহিনী আমাকে আঘাত করেছে, নিদারুণ কষ্ট দিয়েছে।’

‘বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেওয়া ওই সব নারী-শিশুর অসহায় চাহনি আমি কখনো ভুলতে পারব না। পাশে দাঁড়াতে এক হাজার টন মানবিক সাহায্য পাঠিয়েছি।’

এমন মানবিক বিপর্যয়েও দুস্থ-অসহায় রোহিঙ্গাদের পাশে বিশ্ববাসী দাঁড়াচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন এমিনে।

গত ২৪ আগস্ট রাতে রাখাইন রাজ্যে একসঙ্গে ২৪টি পুলিশ ও একটি সেনা ক্যাম্পে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, এ ঘটনার পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় চার লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। আন্তর্জাতিক চাপ থাকা সত্ত্বেও মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ওপর এই সহিংসতা অব্যাহত রেখেছে।