জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা যুদ্ধতুল্য : উত্তর কোরিয়া

Looks like you've blocked notifications!

পারমাণবিক কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ায় উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে জাতিসংঘের নতুন করে কঠোর নিষেধাজ্ঞাকে ‘যুদ্ধনীতির’ সমতুল্য বলে অভিহিত করেছে দেশটি।

দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, জাতিসংঘের নতুন এই নিষেধাজ্ঞা পুরোপুরিভাবে উত্তর কোরিয়ার ওপর অর্থনৈতিক অবরোধের আরোপের শামিল।

পারমাণবিক কর্মসূচি থেকে বিরত থাকা ছাড়াও দেশটির পেট্রোলিয়াম আমদানির ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। পাশাপাশি উত্তর কোরিয়ার যেসব নাগরিক বিদেশে কাজ করেন, তাঁদেরও ফেরানোর কথা বলা হয়েছে। 

নানা আলোচনা-সমালোচনার মুখেও পারমাণবিক কর্মসূচি অব্যাহত রাখায় গত শুক্রবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ নতুন করে আরো কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে উত্তর কোরিয়ার ওপর। নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য রাষ্ট্রগুলো সর্বসম্মতিক্রমে ওই প্রস্তাব পাস করেছে। 

উত্তর কোরিয়া এক বিবৃতিতে বলেছে, জাতিসংঘের নতুন এই নিষেধাজ্ঞা উত্তর কোরিয়ার সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন এবং এই যুদ্ধনীতি কোরিয়া উপদ্বীপ ও বিস্তৃত অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে নষ্ট করে দিচ্ছে।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, উত্তর কোরিয়ার মতো একটি দেশকে পারমাণবিক শক্তিতে স্বয়ংসম্পন্ন হতে দেখে যুক্তরাষ্ট্র পুরোপুরি হতাশ। জাতিসংঘের এই কঠোর নিষেধাজ্ঞা উত্তেজনা ছড়ানোর পাশাপাশি দেশটির ওপর চাপ বাড়াবে বলেও মনে করছে কোরিয়া।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, এই নিষেধাজ্ঞার পর ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক হুমকি, ব্ল্যাকমেইল ও বিরোধী পদক্ষেপের কথা মাথায় রেখে উত্তর কোরিয়া আত্মরক্ষার জন্য পারমাণিক শক্তিতে নিজেদের অবস্থান আরো দৃঢ় করার কথাও জানিয়েছে।

রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এই নিষেধাজ্ঞার পক্ষে যেসব দেশ ভোট দিয়েছে, তাদেরও উত্তর কোরিয়ার ক্ষোভকে মোকাবিলা করতে হবে।

কমিউনিস্ট এই রাষ্ট্র বলছে, এই নিষেধাজ্ঞার ফলে বড় ধরনের অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা ঘটলে যেসব দেশ এর পক্ষে তাদের হাত তুলেছে, তারাই সম্পূর্ণরূপে দায়ী থাকবে। তারা যে কাজ করেছে, সে জন্য তাদের কঠোর মূল্য দিতে হবে বলেও হুঁশিয়ারি করে পিয়ংইয়ং। 

তবে মার্কিন কূটনীতিকরা বলছেন, কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমেই তাঁরা এই সমস্যার সমাধান খুঁজছেন। কিন্তু জাতিসংঘের নতুন এই কঠোর নিষেধাজ্ঞা সেই পথ রুদ্ধ করে দিয়েছে।

উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে প্রায় ৯০ ভাগ বাণিজ্য সম্পন্ন করে থাকে চীন। দেশটির ওপর জাতিসংঘের নতুন এই নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শনিবার বলেছে, আলোচনার মাধ্যমে একটি শান্তিপূর্ণ প্রস্তাব প্রয়োজন। তা ছাড়া সবার পক্ষ থেকেই এই উদ্বেগ নিরসনে পদক্ষেপ নিতে হবে বলে মনে করে চীন। 

একের পর এক পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্রের মহড়া চালানোর ঘটনায় দীর্ঘদিন ধরে উত্তর পিয়ংইয়ং ও হোয়াইট হাউসের মধ্যে উত্তেজনা চলছে। 

এর আগে সর্বশেষ ১৫ সেপ্টেম্বর ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালায় উত্তর কোরিয়া। চলতি বছরে পঞ্চম ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা ছিল সেটি। এ ছাড়া সেপ্টেম্বরের শুরুতে ষষ্ঠবারের মতো পারমাণবিক বোমার বিস্ফোরণ ঘটায় দেশটি। সর্বশেষ অক্টোবরে হাইড্রোজেন বোমার পরীক্ষা চালানো হয়।