মৃত্যুর আগে শিশুর কিডনি দান

‘মা আমি তোমাকে বাঁচাতে চাই’

Looks like you've blocked notifications!

আমাদের খুব আপনজন যখন ভয়াবহ কোন রোগে আক্রান্ত হয়, যখন জানতে পারি খুব দ্রুতই হারাতে হবে তাকে, আমরা শঙ্কিত হই। ইচ্ছা হয়, নিজের জীবন দিয়েও যদি তাকে ধরে রাখা যেত! এমন অনুভূতির মুখোমুখি হয়তো আমরা কেউ কেউ হয়েছি।

কিন্তু যদি এমন হয় যে আপনি নিজেই মৃত্যুর দুয়ারে দাঁড়িয়ে আছেন, চাইলেই বাঁচাতে পারেন আপনার অতি আপনজনকে, কী করবেন তখন? দোটানায় পড়ে যাবেন নিশ্চয়ই। কিন্তু এত বড় সিদ্ধান্তটি নিতে দোটানায় পড়তে হয়নি ছোট্ট শিশু চেন সিশিয়ানকে।

মাত্র পাঁচ বছর বয়সেই চেন সিশিয়ানের মস্তিষ্কে টিউমার ধরা পড়ে। তবে প্রথমটায় চিকিৎসকরা বলেছিলেন ভালো হয়ে যাবে চেন। কিন্তু চেন ততটা ভাগ্যবান ছিল না। খুব দ্রুতই ভয়াবহ হয়ে ওঠে তার টিউমার। একসময় ক্যানসারে পরিণত হয়। কিন্তু মৃত্যুশয্যায় চেন জানতে পারে তার মায়ের খুব দ্রুত কিডনি স্থানান্তর প্রয়োজন। নইলে হয়তো বাঁচবেন না তার মা চৌ লু।

মায়ের রক্তের সঙ্গে মিলে যাওয়ায় চিকিৎসকরা কথা বলেছিলেন তার দাদির সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘তারা আমার সঙ্গে কথা বলেছিল। বলেছিল চেন মারা গেলেও, খুব দ্রুত ওর কিডনি স্থানান্তর করা গেলে সে তার মাসহ তিনটি জীবন বাঁচাতে পারবে। তাই আমি চৌ লুর সঙ্গে কথা বলি।’ কিন্তু চৌ লু এককথায় না করে দিয়েছিলেন বলে জানান তিনি। আসলে মা শুনতেই চাচ্ছিলেন না। তিনি তো মা।

কিন্তু চেন সব কথা শুনেছিল। সে ঠিক করে নিয়েছিল সে তার মাকে কিডনি দেবেই। বলেছিল, ‘মা আমি তোমাকে বাঁচাতে চাই।’

এভাবেই সাহসী শিশু চেন চলে যায় পৃথিবী ছেড়ে কিন্তু বাঁচিয়ে দিয়ে যায় তার মায়ের প্রাণ। সেদিন কেঁদেছিল হাসপাতালে উপস্থিত সবাই। চিকিৎসকরা চেনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সংক্ষিপ্ত দোয়া করেছিলেন, পালন করেছিলেন নীরবতা।