নয়াদিল্লির চলন্ত বাসে গণধর্ষণে তিনজনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল
ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে আলোচিত প্যারামেডিকেল ছাত্রীকে চলন্ত বাসে গণধর্ষণ ও হত্যা মামলায় দোষীদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখেছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট।
আজ সোমবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র, বিচারপতি আর ভানুমতী ও বিচারপতি অশোক ভূষণের বেঞ্চ এই রায় দিয়েছেন।
এনডিটিভি বলছে, ওই রায়ের ফলে মুকেশ (২৯), পবন গুপ্ত (২২) ও বিনয় শর্মার (২৩) ফাঁসির সাজা বহাল থাকল। ২০১৭ সালের ৫ মে তিনজনের বিরুদ্ধে দেওয়া ফাঁসির রায় পুনরায় বিবেচনার জন্য আপিল করা হয়েছিল। আজ সেই আপিল খারিজ করে দেওয়া হয়। তবে ওই মামলায় অপর এক দোষী অক্ষয় কুমার সিংহ তাঁর মৃত্যুদণ্ডের সাজার বিরুদ্ধে কোনো আবেদন জানাননি।
রায়ে আদালত বলেন, দোষীদের আবেদন পুনরায় বিবেচনার যোগ্য নয়।
এর আগে দিল্লি হাইকোর্টের ফাস্টট্রাক কোর্ট চার অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করে ফাঁসির সাজা দেয়। এই মামলায় অপ্রাপ্তবয়স্ক এক অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করে তিন বছর সংশোধনাগারে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। তিন বছর পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ ছাড়া ২০১৩ সালে এই মামলার প্রধান আসামি বাসচালক রাম সিং দিল্লির তিহার জেলে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।
২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর জ্যোতি সিংকে চলন্ত বাসে গণধর্ষণের পর বাস থেকে ছুড়ে ফেলে হত্যার ঘটনা ভারতসহ গোটা বিশ্বজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি করে। জ্যোতি আর তাঁর এক বন্ধু মিলে দক্ষিণ দিল্লির একটি সিনেমা হল থেকে বাসায় ফেরার উদ্দেশে বাসে উঠলে ছয়জন দুর্বৃত্ত তাঁদের আক্রমণ করে। বাসে ঘণ্টাব্যাপী ধর্ষণ ও নির্যাতনের পর জ্যোতিকে রাস্তার পাশে অর্ধমৃত অবস্থায় ছুড়ে ফেলা হয়।
জ্যোতিকে যখন উদ্ধার করা হয়, তখন তার পেটের নাড়িভুঁড়ি বেরিয়ে গিয়েছিল, কিন্তু বেঁচে ছিলেন তিনি। বেঁচে থাকার জন্য তাঁর এই দুর্দান্ত সাহসিকতা দেখে তাঁর নাম দেওয়া হয়েছিল ‘নির্ভয়া’। প্রথমে দিল্লিতে এবং পরে সিঙ্গাপুরে ১৩ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াইয়ের পর মারা যান তিনি।
২০১২ সালের এই বর্বরোচিত ধর্ষণের ঘটনা যখন জানাজানি হয়, তখন ভারতের রাজধানীর রাস্তায় নেমে এসেছিলেন হাজার হাজার প্রতিবাদী মানুষ। এমনকি ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে যখন আদালতে এই মামলার বিচারকাজ চলছিল, তখন এই ধর্ষকদের ফাঁসির দাবিতে উত্তাল ছিল ভারতবাসী। কিন্তু বিচারের সব আবেদন ম্লান করে দিয়ে ‘আইনের ফাঁক গলে’ বেরিয়ে যায় ‘নাবালক’ ধর্ষক।