শরণার্থীকে ল্যাং-লাথি, নারী সাংবাদিক চাকরিচ্যুত

Looks like you've blocked notifications!
হাঙ্গেরির রোয়েজকি অঞ্চলের একটি আশ্রয়কেন্দ্রে পুলিশ তাড়া করলে সন্তানকে কোলে নিয়ে ছুটে পালিয়ে যাওয়ার সময় এক বাবাকে ল্যাং মেরে ফেলে দেন এনওয়ান টেলিভিশনের সাংবাদিক পেট্রা লাজলো। ছবি : দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট

হাঙ্গেরি থেকে অস্ট্রিয়া হয়ে জার্মানিতে যাওয়ার জন্য হাজার হাজার অভিবাসনপ্রত্যাশী দেশটিতে আশ্রয় নিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার একটি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে পুলিশের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য শত শত শরণার্থী পালানোর চেষ্টা করছিল। অন্যান্য সাংবাদিকের মতো দৃশ্যটি ধারণ করছিলেন হাঙ্গেরির একটি টিভি চ্যানেলের নারী সাংবাদিক। এ সময় তাঁর সঙ্গে দিগ্বিদিক ছুটে যাওয়া শরণার্থীদের ধাক্কা লাগে। এতেই তাঁর রাগ সপ্তমে চড়ে যায়। প্রথমে তিনি দুই শিশুকে লাথি মারেন। তার পর সন্তানকে কোলে নিয়ে পুলিশের হাত থেকে পলায়নরত এক বাবাকে ল্যাং মারেন। এতে তিনি সন্তানসহ মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এই অসদাচরণের জন্য অবশ্য তাঁর চাকরি চলে গেছে। কিন্তু এরই মধ্যে তাঁর এই কর্মকাণ্ডের ভিডিওচিত্র ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে এবং ব্যাপক সমালোচনা ঝড় উঠেছে।

দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের খবরে বলা হয়, এক জার্মান সংবাদদাতা এই ভিডিওচিত্র ধারণ করেছেন। হাঙ্গেরির অনলাইন সংবাদমাধ্যম ৪৪৪.হুর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী বরখাস্ত করার আগ পর্যন্ত পেট্রা লাজলো নামের এই সাংবাদিক টিভি চ্যানেল এনওয়ান-এ কাজ করতেন।

এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পর গতকালই টিভি চ্যানেলটি তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইটে একটি বিবৃতি দিয়েছে। চ্যানেলের সম্পাদক সাবচ কিসবার স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আজ রোয়েজকি অঞ্চলের একটি আশ্রয়কেন্দ্রে এনওয়ান টেলিভিশনের এক সহকর্মী অপ্রত্যাশিত আচরণ করেছেন। তাৎক্ষণিক এই ক্যামেরাপারসনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।’

যুক্তরাষ্ট্রের টিভি চ্যানেল এনবিসির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গতকাল মঙ্গলবার হাঙ্গেরি-সার্বিয়া সীমান্তের কাছে শত শত শরণার্থী এই আশ্রয়কেন্দ্রে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। হাজার হাজার অভিবাসনপ্রত্যাশী কয়েক দিন ধরে হাঙ্গেরি থেকে জার্মানি ও অস্ট্রিয়ায় যাচ্ছে। জার্মান সরকার শরণার্থীদের আশ্রয় দিতে রাজি হওয়ার পর অস্ট্রিয়া তার সীমান্ত খুলে দিয়েছে। হাঙ্গেরি সরকার বাসে করে তাদের সীমান্তে পৌঁছে দিচ্ছে। কিন্তু স্থানীয় পুলিশ তাদের বাধা দিচ্ছে।

এই ভিডিওচিত্র ছড়িয়ে পড়ার পর টুইটারে নিন্দার ঝড় উঠেছে। টুইটার ব্যবহারকারীরা ক্যামেরাপারসনের এই আচরণের নিন্দা জানিয়েছেন এবং টিভি চ্যানেলের পক্ষ থেকে ক্ষমা দাবি করেন। কেউ কেউ বলেছেন, এ ঘটনার মাধ্যমে এটিই প্রমাণ হয়, হাঙ্গেরির বেশির ভাগ সাংবাদিক দেশটির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবানের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। ভিক্টর শরণার্থীদের আশ্রয়ের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন।

ইরানি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ সাংবাদিক সানাম শান্টিয়াই এ দৃশ্যকে ‘ভয়াবহ’ বলে উল্লেখ করেছেন। অনেকে এনওয়ান চ্যানেল বন্ধ রাখার দাবি জানিয়েছেন।