পশ্চিমবঙ্গে ফেলানীর স্মৃতিরক্ষায় গণমঞ্চ
সীমান্তে কাঁটাতারে বাংলাদেশি কিশোরী ফেলানী খাতুনের হত্যাকাণ্ডের পর বরাবরই সোচ্চার ভূমিকা পালন করেছে ভারতের বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন। নির্মম এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চলার সময়ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে জনমত গড়ে তুলেছিল সংগঠনগুলো। এবার ফেলানীর স্মৃতিতে কয়েকশ মোমবাতি প্রজ্বালনের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানাল ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মানবাধিকার একটি সংগঠন। পাশাপাশি ফেলানীর স্মৃতিরক্ষায় গণমঞ্চ তৈরির ঘোষণাও দিয়েছে সংগঠনটি।
আজ শনিবার বিকেলে পশ্চিমবঙ্গের হাবড়ার ‘টুনিঘাটা পিপলস মুভমেন্ট অব হিউম্যান রাইটস ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন’ নামে সংগঠনটি এই কর্মসূচি আয়োজন করে। টুনিঘাটা এলাকায় সংগঠনটির প্রধান কার্যালয়ের সামনে কর্মীরা নিহত কিশোরী ফেলানীর ছবিতে মোমবাতি জ্বালিয়ে শ্রদ্ধা জানান। সমবেত কণ্ঠে ফেলানী হত্যার বিরুদ্ধে গর্জে উঠে তাঁরা আওয়াজ তোলেন- ‘ফেলানী তোমার সমাধি ফুলে ফুলে ঢাকা, আমরা আছি তোমার পাশে, তুমি নও একা।’ হাতে রক্তলাল হরফে লেখা প্ল্যাকার্ডে শোভা পায় ‘সীমান্তের বেড়া বুঝি না, ফেলানী তোমায় ভুলব না।’
সংস্থাটির সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব কাঞ্জিলাল এনটিভি অনলাইনকে জানান, ‘ফেলানীর নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিচারের নামে যে প্রহসন চলছে তার প্রতিবাদ জানাই আমরা। এই প্রতিবাদের ধারাবাহিকতায় আমরা ফেলানি খাতুনের স্মৃতিরক্ষার জন্য এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছি। আমরা ফেলানীকে ভুলছি না, ভুলব না। সারা বিশ্বে ফেলানীর মতো নির্মমভাবে আর যাতে কাউকে মরতে না হয়।’
সঞ্জীব কাঞ্জিলাল বলেন, ‘ফেলানীর পরিবার যদি ভারতে কোনো রকম সাহায্যের জন্য যোগাযোগ করে, আমাদের সর্বশক্তি দিয়ে তাদের সহযোগিতা করব।’ পাশাপাশি, ফেলানী হত্যার ন্যায়বিচারের জন্য এই প্রতিবাদী ভূমিকা অব্যাহত থাকবে বলেও জানিয়ে দেন তিনি।
সঞ্জীব কাঞ্জিলাল আরো জানিয়েছেন, এরই মধ্যে ‘টুনিঘাটা পিপলস মুভমেন্ট অব হিউম্যান রাইটস ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন’-এর তরফে ফেলানী হত্যায় এক গণমঞ্চ তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। ফেলানীর স্মৃতিকে ধরে রাখতে এই মঞ্চ সামাজিক নানা কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে যেমন বাংলাদেশের কিশোরী ফেলানী খাতুনের স্মৃতি সংরক্ষণ করবে, তেমনি ভারত-বাংলাদেশ দুই দেশের মৈত্রীবন্ধনে যাতে আগামী দিনে এভাবে কাঁটাতারে ঝুলে কারো প্রাণ না যায় সেদিকেও নজর দেবে এই সংস্থা।