সৌদি যুবরাজ খাসোগি হত্যায় জড়িত থাকতেও পারেন : ট্রাম্প

Looks like you've blocked notifications!
সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান (বামে) ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি : সংগৃহীত

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথমবারের মতো বলেছেন, প্রখ্যাত সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ডে পরিচালিত অভিযানে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান জড়িত থাকতেও পারেন। তিনি আরো বলেছেন, ‘যুবরাজ রিয়াদে বসে সব নিয়ন্ত্রণ করছেন।’

মার্কিন গণমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে মঙ্গলবার দেওয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে নিজের অবস্থান পরিবর্তন করলেন। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে একই দিন বলা হয়, তাঁরা এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সৌদি কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে ভাবছেন।

তবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মনে করছেন, সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ ব্যাপারটি নাও জানতে পারেন। তবে তাঁর ক্ষমতাধর ছেলের ব্যাপারে সে ধারণা পোষণের সুযোগ নেই।

যুবরাজ এ হত্যাকাণ্ডে কোন পর্যায়ে জড়িত থাকতে পারেন—এমন প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘এখন রিয়াদে বসে সবই নিয়ন্ত্রণ করেন যুবরাজ। অতএব, কেউ যদি এতে জড়িত থেকে থাকে, সেটি সেও হতে পারে।’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে সৌদি যুবরাজের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। এ সময় হত্যাকাণ্ডে যুবরাজ জড়িত কি না এই প্রশ্নটি কয়েকভাবে তাঁকে করেছেন বলেও জানান।

যুবরাজকে ট্রাম্পের প্রথম প্রশ্ন ছিল, কোনোভাবে এ হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনার বিষয়ে তিনি ওয়াকিবহাল ছিলেন কি না? ট্রাম্প বলেন, যুবরাজ সরাসরি এর জবাবে বলেন, ‘না, তিনি জানতেন না।’

ট্রাম্প জিজ্ঞেস করেন, ঘটনার শুরুটা কোথায় হয়েছিল? জবাবে যুবরাজ বলেন, ‘নিম্নপদস্থরা এর শুরু করেন।‌‌’

যুবরাজের নাকচের ব্যাপারে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানতে চাইলে ট্রাম্প কিছুক্ষণ থেমে বলেন, ‘আমি আসলে তাদের বিশ্বাস করতে চাই।’

বরখাস্ত ও গ্রেপ্তার হওয়া ২১ সৌদি নাগরিকের যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা বাতিল এবং পরবর্তী সময়ে ভিসা প্রদানে নিষেধাজ্ঞা জারি করে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও বলেছেন, ‌‘এটাই শেষ কথা নয়, নিষেধাজ্ঞার পরিসর আরো বাড়তে পারে।’ তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র সাংবাদিক খাসোগির এমন মৃত্যু কোনোমতেই সহজভাবে নেবে না। আমি এবং প্রেসিডেন্টও এ ঘটনায় মোটেই ভালো অবস্থায় নেই।’

এ ছাড়া হোয়াইট হাউসে গতকাল ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, হত্যাকাণ্ড ঘটানো থেকে শুরু করে পরবর্তী সময়ে ঘটনা ধামাচাপার নিকৃষ্ট উদাহরণ সৃষ্টি করা হয়েছে।

গত ২ অক্টোবর বিয়ে-সংক্রান্ত কাগজপত্র সংগ্রহ করতে তুরস্কের ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে যান খাসোগি। বাগদত্তা তুর্কি নারী হেতিজ জেঙ্গিসকে বাইরে রেখে কনস্যুলেটে প্রবেশের পর আর ফেরেননি তিনি।

এ নিয়ে তুরস্ক ও সৌদি সরকার একে অপরকে দোষারোপ করে আসছিল। সৌদি আরব বলে আসছিল, কনস্যুলেট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর নিখোঁজ হয়েছেন খাসোগি।

সৌদি আরব অবশ্য দুই সপ্তাহ পর গত ১৯ অক্টোবর শুক্রবার স্বীকার করে নেয় যে খাসোগি সৌদি কনস্যুলেটে খুন হয়েছেন। তবে এখন পর্যন্ত সৌদি আরব খাসোগির মরদেহ কোথায় আছে, তা নির্দিষ্ট করে জানায়নি।

পরে ২২ অক্টোবর রোববার সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল জুবেইর জানান, জামাল খাসোগিকে ‘ভুলক্রমে’ হত্যা করা হয়েছে।

সৌদি আরব এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের ঘনিষ্ট উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা সৌদ আল-কাহতানিসহ পাঁচজনকে বরখাস্ত করে এবং ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করে।