সৌদি আরব ছাড়লেন খাসোগির ছেলে
নিহত সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগির ছেলে সৌদি আরব ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন বলে জানা গেছে।
সৌদি সরকার খাসোগিপুত্রের পাসপোর্টে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় সালাহ বিন জামাল খাসোগি কয়েক মাস ধরে সৌদি আরবের বাইরে কোথাও যেতে পারেননি।
সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্রের দ্বৈত নাগরিক সালাহ নিহত সাংবাদিক জামাল খাসোগির বড় ছেলে। সম্প্রতি তিনি এবং খাসোগির ভাই সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ ও যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
শুক্রবার খাসোগি পরিবারের ঘনিষ্ঠ সূত্রের বরাতে এ খবর দিয়েছে মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এর আগে সালাহর ওপর থেকে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার আহ্বান জানান। পরে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি মুখপাত্র রবার্ট পাল্লাদিনো বলেছন, খাসোগিপুত্রকে দেশ ছাড়ার সুযোগ দেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ‘সন্তুষ্ট’।
সর্বশেষ সৌদি সরকার খাসোগি হত্যার পূর্বপরিকল্পনার বিষয়টিও স্বীকার করে নিয়েছে। শুরুতে সৌদি সরকার এই হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে কোনো কিছুই জানে না বলে দাবি করেছিল। তুরস্কের অনড় অবস্থানের মুখে প্রথমে সৌদি কনস্যুলেটের ভেতরে হত্যা এবং পরে পূর্বপরিকল্পিত হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে নেয় সৌদি আরব।
গত ২ অক্টোবর বিয়ে-সংক্রান্ত কাগজপত্র সংগ্রহ করতে তুরস্কের ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে যান খাসোগি। বাগদত্তা তুর্কি নারী হেতিজ জেঙ্গিসকে বাইরে রেখে কনস্যুলেটে প্রবেশের পর আর ফেরেননি তিনি।
এ নিয়ে তুরস্ক ও সৌদি সরকার একে অপরকে দোষারোপ করে আসছিল। সৌদি আরব বলে আসছিল, কনস্যুলেট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর নিখোঁজ হয়েছেন খাসোগি।
সৌদি আরব অবশ্য দুই সপ্তাহ পর গত ১৯ অক্টোবর শুক্রবার স্বীকার করে নেয় যে খাসোগি সৌদি কনস্যুলেটেই খুন হয়েছেন। তবে এখন পর্যন্ত সৌদি আরব খাসোগির মরদেহ কোথায় আছে, তা নির্দিষ্ট করে জানায়নি।
পরে ২২ অক্টোবর রোববার সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল জুবেইর জানান, জামাল খাসোগিকে ভুলক্রমে হত্যা করা হয়েছে।
অনেকেরই ধারণা, এর সঙ্গে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান জড়িত থাকতে পারেন। গত মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও এমন ধারণার কথা জানান।
সৌদি আরব এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এ পর্যন্ত উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা সৌদ আল-কাহতানিসহ পাঁচজনকে বরখাস্ত ও ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
অন্যদিকে সর্বশেষ গত মঙ্গলবার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান দাবি করেন, খাসোগিকে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী হত্যা করা হয়েছে। শেষমেশ সৌদি আরব পূর্বপরিকল্পনার বিষয়টিও স্বীকার করে নিল।