অস্ট্রেলিয়ার সিডনির হামলাকারীর সঙ্গে ‘জঙ্গিবাদের যোগাযোগ’
অস্ট্রেলিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে নিউ সাউথ ওয়েলস (এনএসডব্লিউ) রাজ্যের সিডনি শহরে পুলিশ সদর দপ্তরের সামনে গুলিবর্ষণের ঘটনাটি ১৫ বছরের এক কিশোর একাই ঘটিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ফরহাদ খলিল মোহাম্মদ জাবের নামে মধ্যপ্রাচ্যের ওই কিশোর সিডনির পারাম্যাটা এলাকায় একজনকে হত্যা করার পর পুলিশের গুলিতে নিজেও নিহত হয়। কিশোরটি জঙ্গিবাদের সঙ্গে কোনোভাবে যুক্ত বলে ধারণা করছে পুলিশ।
সানডে টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, শুক্রবার স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সিডনি শহরের দক্ষিণ অংশে পারাম্যাটা এলাকায় এনএসডব্লিউ পুলিশ সদর দপ্তরের সামনে ফরহাদ খলিল মোহাম্মদ জাবের গুলি চালায়। এতে কার্টিস চেং (৫৮) নামে পুলিশের একজন হিসাবরক্ষণ কর্মী নিহত হন। ওই সময় পুলিশ দপ্তরের প্রধানফটকে দায়িত্বে থাকা তিনজন নিরাপত্তাকর্মী ফরহাদ খলিলকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। ঘটনার সময় তার পরনে ছিল কালো পোশাক। আর ঘটনাস্থলে আসার আগে কাছেই মার্সডেন স্ট্রিটে অবস্থিত পারাম্যাটা মসজিদে যায়।
এনএসডব্লিউর পুলিশ কমিশনার অ্যান্ড্রু সিপিয়ন বলেন, গতকাল বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে পুলিশের কর্মকর্তা কার্টিং চেংকে হত্যার পরপরই পুলিশের গুলিতে হামলাকারী নিহত হয়। হামলাকারী নির্দিষ্ট রাজনৈতিক মনোভাব পোষণ করে এবং কোনোভাবে জঙ্গিবাদের সঙ্গে যুক্ত বলে তিনি মনে করেন। তবে এখনো এ বিষয়ে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ঘটনার তদন্ত চলছে বলে তিনি জানান।
সিডনি মর্নিং হেরাল্ডের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আজ শনিবার দুপুরে এনএসডব্লিউর তদন্তকারী দল মার্সডেন স্ট্রিটের পারাম্যাটা মসজিদে যায়। সেখানে তাঁরা ১০ মিনিটের মতো সময় নিলেও তদন্তের ব্যাপারে কোনো তথ্য সাংবাদিকদের জানাননি। আর ওই মসজিদের চেয়ারম্যান নিল এল-কাদোমি বলেন, মসজিদ সবার জন্যই খোলা থাকে। যে কেউ এখানে আসতে পারে। তিনি বলেন, প্রতিদিন এখানে ৪০০ থেকে ৫০০ মানুষ নামাজ আদায় করেন। ফরহাদ খলিলকে আলাদা করে তিনি স্মরণে রাখতে পারেননি।
সিডনি মর্নিং হেরাল্ডের প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, শিশুর মতো দেখতে ফরহাদ খলিল নর্থ পারাম্যাটার একটি ফ্ল্যাটে পরিবারের সঙ্গে থাকত। অনলাইনে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, সে সিডনির আর্থার ফিলিপ হাইস্কুলের শিক্ষার্থী। স্কুলটি পুলিশ সদর দপ্তরের মাত্র ৩০০ গজ দূরে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অন্তর্ভুক্ত থাকলেও দুই বছর ধরে সে কোনো পোস্ট দেয়নি। এ ছাড়া সে বাস্কেটবল ও গানের রিয়েলিটি অনুষ্ঠানের ভক্ত ছিল।
প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুল মেলবোর্নে এক সংবাদ সম্মেলনে গতকালের সিডনির ঘটনাকে ভিন্নমতাদর্শী ১৫ বছরের বালকের ‘ঠান্ডা মাথায় খুন’ বলে মন্তব্য করেছেন। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী দেশের মানুষকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
দেশের মধ্যেই থাকা জঙ্গি সংশ্লিষ্টদের দমনে সম্প্রতি অনেক উদ্যোগ নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া সরকার। চলতি বছর মার্চ ও এপ্রিলে দুটি জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেছে। সবগুলো ঘটনায়ই সংশ্লিষ্ট ১৫ থেকে ১৭ বছর বয়সী কিশোর।