সাহিত্যে নোবেল পেলেন বেলারুশের সিয়েৎলানা

Looks like you've blocked notifications!
বেলারুশের সাংবাদিক ও গদ্যলেখিকা সিয়েৎলানা আলেক্সিয়েভিচ। ছবি : রয়টার্স

চলতি বছর সাহিত্যে নোবেল পেয়েছেন বেলারুশের সাংবাদিক ও লেখিকা সিয়েৎলানা আলেক্সিয়েভিচ। রয়্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমি আজ বৃহস্পতিবার সাহিত্যে ১১২তম নোবেল বিজয়ী হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণা করে। পুরস্কার ঘোষণার সময় নোবেল কমিটি বিবৃতিতে বলেছে, এই স্বীকৃতি তাঁর বহুমাত্রিক লেখার জন্য যা আমাদের সময়ের দুর্ভোগ ও সাহসের স্মৃতিস্তম্ভ।

৬৭ বছরের সিয়েৎলানা চতুর্দশ নারী হিসেবে সাহিত্যে নোবেল জিতলেন। পুরস্কার ঘোষণার পর সুইডিশ একাডেমির স্থায়ী সচিব সারা দানিউস বলেন, তিনি ‘এ হিস্ট্রি অব ইমোশন- এ হিস্ট্রি অব দ্য স্যোল, ইফ ইউ উইশের’ মতো অসাধারণ সৃষ্টি করেছেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশ নেওয়া ১০০ নারীর একক ভাষণ নিয়ে তাঁর সাক্ষাৎকারভিত্তিক বই ‘ওয়্যারস আনওম্যানলি ফেস’ও একটি উল্লেখযোগ্য সাহিত্যকীর্তি। এ ছাড়া তাঁর লেখা বই ‘ভয়েস অব ইউটোপিয়া’ এবং ‘ফ্র, দ্য পারসেপেকটিভ অব দ্য ইনডিভিজ্যুয়াল’ও তৎকালীন সোভিয়েত সমাজব্যবস্থার এক অনন্য দলিল। বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় প্রকাশিত তাঁর গ্রন্থগুলো তাঁকে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে পরিচিতি এনে দিয়েছে।

ইউক্রেনের স্তানিস্লাভে ১৯৪৮ সালের ৩১ মে জন্ম সিয়েৎলানার। তাঁর মা ইউক্রেনের আর বাবা বেলারুশের অধিবাসী ছিলেন। সিয়েৎলানার পুরো নাম সিয়েৎলানা আলেক্সান্দ্রভনা আলেক্সিয়েভিচ। নোবেল কমিটির বিবৃতিতে তাঁর পেশা হিসেবে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা এবং অপেশাদার পাখি বিজ্ঞানী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি গত বছরও এ পুরস্কারের সংক্ষিপ্ত তালিকায় ছিলেন।

এর আগে ২০১৪ সালে সাহিত্যে নোবেল পেয়েছিলেন ফরাসি ঔপন্যাসিক প্যাত্রিক মোদিয়ানো, যার গল্পেরা গড়ে উঠেছে মানব মনের স্মৃতি-বিস্মৃতির খেলা, আত্মপরিচয়ের সংকট আর প্যারিসে নাৎসি দখলদারত্বের ইতিহাসকে কেন্দ্র করে।

দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, গতকাল সোমবার চিকিৎসাশাস্ত্রের মধ্য দিয়ে এবারের নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা শুরু হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে পদার্থবিদ্যা ও রসায়নের পর আজ বৃহস্পতিবার সাহিত্যে নোবেল বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হলো। আগামীকাল শুক্রবার শান্তি এবং ১২ অক্টোবর সোমবার অর্থনীতিতে এবারের নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে।

বিভিন্ন ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে সুইডিশ বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেল ১৮৯৫ সালে তাঁর উপার্জিত অর্থ মানবকল্যাণে বিভিন্ন অবদানে পুরস্কার প্রদানের জন্য একটি উইল করে যান। এরপর গবেষণা, উদ্ভাবন ও মানবতার কল্যাণে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ মোট ছয়টি শাখায় নোবেল পুরষ্কার দেওয়া হয়। শাখাগুলো হলো পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, চিকিৎসাশাস্ত্র, অর্থনীতি, সাহিত্য ও শান্তি।

এরপর ১৯০১ সাল থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে অসামান্য অবদানের জন্য পুরস্কার দিয়ে আসছে নোবেল কমিটি। সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে বিভিন্ন বিষয়ে নোবেল পুরস্কার ঘোষণা ও দেওয়া হয়। আর নরওয়ের রাজধানী অসলো থেকে ঘোষণা করা হয় শান্তিতে নোবেল পুরস্কার।

নোবেল পুরস্কারের অর্থমূল্য ৮০ লাখ সুইডিশ ক্রোনার। আগামী ১০ ডিসেম্বর সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে আনুষ্ঠানিকভাবে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে।