মর্মে পীড়া দেয় যে মৃত্যু

Looks like you've blocked notifications!

মাত্র ১২ বছর বয়সেই কঠিন পরীক্ষা দিতে হয়েছে অ্যাঞ্জেল প্যারেজকে। তাঁকে আটক করে দুর্বৃত্তরা সেই পরীক্ষা নেয়। প্যারেজের সামনে এক বাসচালককে এনে বলা হয় গুলি করতে। যদি গুলি না করে তবে প্যারেজকেই মেরে ফেলা হবে। 

প্যারেজ খানিক সময় নেয়। দাঁড়িয়ে আছেন বাসচালক। বাবার মুখটা ভেসে ওঠে প্যারেজের সামনে। ওর নিজের বাবাও যে একজন বাসচালক। ‘না’ করে দেয় প্যারেজ। ওর দ্বারা এ কাজ হবে না। 

তাহলে প্যারেজের মৃত্যু নিশ্চিত। এবারও দুর্বৃত্তরা পরীক্ষা নিতে থাকে প্যারেজের। বলা হয়, কীভাবে মরতে চায় সে? ছুরির আঘাতে? নাকি সেতু থেকে ফেলে দেওয়া হবে। আর মৃত্যু এড়াতে আবারও বলা হয় বাসচালককে গুলি করতে। 

বাসচালকের মাঝে প্যারেজ নিজের বাবাকেই দেখে ফেলেছে। অসম্ভব। প্যারেজ জানাল, সামনের সেতুটা থেকেই যেন তাকে ফেলা দেওয়া হয়। সব উত্তরই দিল প্যারেজ। পাস-ফেলের ব্যাপারটা বোঝা গেল না। দুর্বৃত্তরা সাড়ে ৪০০ ফুট উঁচু সেতু থেকে শিশু প্যারেজকে ছুড়ে ফেলে দেয়। 
কোনো চলচ্চিত্রের কাহিনী নয়। সম্প্রতি মধ্য আমেরিকা অঞ্চলের দেশ গুয়েতেমালার রাজধানী গুয়াতেমালা সিটিতে এ ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে মেইল অনলাইন। 

অ্যাঞ্জেল প্যারেজের পুরো নাম অ্যাঞ্জেল অ্যারিয়েল এসকালান্তে প্যারেজ। স্কুল থেকে বাসায় যাচ্ছিল। পথেই প্যারেজকে আটকায় দুর্বৃত্তরা। এরপরই প্যারেজকে নিয়ে ভয়ংকর খেলায় মেতে ওঠে দুর্বৃত্তরা।

বাসচালককে গুলি করা অথবা নিজের মৃত্যু বেছে নেওয়ার কথা বলা হয় প্যারেজকে। কিন্তু প্যারেজ নিজেই দুর্বৃত্তদের জানিয়েছে, বাবার চেহারাটা ভেসে উঠেছে ওই বাসচালকের মুখে। তার দ্বারা সম্ভব নয়। 
এরপর সিটির বিখ্যাত ইনসেনসো সেতু থেকে প্যারেজকে ছুড়ে ফেলে দেয় দুর্বৃত্তরা। ওই ঘটনার তিনদিন পর প্যারেজের প্রিয় বাবা লুই এসকালান্তে প্যারেজকে খুঁজে পান গুরুতর আহত অবস্থায়। ১৫ দিন হাসপাতালে ছিল প্যারেজ। চিকিৎসকরা অনেক চেষ্টা করেছেন। কিন্তু প্রিয় বাবার বুকে মাথা রেখেই বিদায় নিয়েছে শিশু প্যারেজ। 

গুয়েতেমালার ফায়ার সার্ভিসের মুখপাত্র জাভিয়ের সোতো বলেন, ‘প্যারেজের বাবা বলেছিল ৭২ ঘণ্টা ধরে নিখোঁজ। আমরা জানাই দুর্বৃত্তরা প্যারেজকে ছুড়ে ফেলেছে। কেননা সে বাসচালককে হত্যা করতে চায়নি।’ তিনি আরো বলেন, ‘দুর্বৃত্তরা তাকে বলেছিল কীভাবে সে মারা যেতে চায়। এখানেও তাকে একটা উপায় বেছে নিতে হয়েছে।’