ভারতে প্রতি ১৩ জনে ১ জন গো-মাংস খায়
গো-মাংস নিষিদ্ধ করা নিয়ে ভারতে এখন বিতর্কের ঝড় বাইছে। কয়েক সপ্তাহ আগে উত্তর প্রদেশে গরুর মাংস খাওয়ার গুজবে এক মুসলিমকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনার পর থেকেই এই বিতর্ক শুরু হয়েছে। এই বিতর্কের মধ্যে ভারতের কোনো জনগোষ্ঠী কী পরিমাণ গো-মাংস খায় তা নিয়ে একটি সমীক্ষা প্রকাশ করেছে সরকারি সংস্থা। এতে বলা হয়েছে, ভারতের আট কোটি মানুষ গরু অথবা মহিষের মাংস খায়। এর মধ্যে এক কোটি ২৫ লাখ হিন্দু রয়েছে।
ভারতের ন্যাশনাল স্যাম্পল সার্ভে অফিসের (এনএসএসও) সর্বশেষ তথ্যে দেখা গেছে, ভারতের আট কোটি মানুষ অর্থাৎ প্রতি ১৩ জন ভারতীয়ের মধ্যে একজন গরু অথবা মহিষের মাংস খান। এই সংখ্যা জার্মানির জনসংখ্যার সমান এবং ভারতের সব রাজ্যের সব ধর্মের মানুষই এর মধ্যে রয়েছে। ধর্মীয় বিশ্বাস থেকে মুসলমানরা গরুর মাংস খেয়ে থাকে। তাই এই আট কোটি মানুষের বেশির ভাগই মুসলমান।
এনএসএসওর বরাত দিয়ে নয়দিল্লিভিত্তিক পত্রিকা লাইভমিন্ট জানিয়েছে, ছয় কোটি ৩৪ লাখ মুসলমান গরু অথবা মহিষের মাংস খায়। এই সংখ্যা ভারতে মুসলিম জনসংখ্যার ৪০ শতাংশ। এ ছাড়া ২৬ দশমিক ৫ শতাংশ খ্রিস্টান এবং ২ শতাংশেরও কম হিন্দু গরু অথবা মহিষের মাংস খায়। এই হিসাবে এক কোটি ২৫ লাখ হিন্দু গো-মাংস ভক্ষণ করে থাকে। লাইভমিন্ট হিন্দুস্তান টাইমসের একটি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান।
এনএসএসও ২০১১ থেকে ২০১২ সালে এক লাখ এক হাজার পরিবারের ওপর এই সমীক্ষাটি করেছে। দেখা গেছে, নয় হাজার ৭১১ পরিবার গো-মাংস খায়। ১১০ কোটি জনসংখ্যার আট কোটি ৩৫ লাখ অর্থাৎ প্রায় ৭ দশমিক ৩৫ শতাংশ এই মাংসের তৈরি বিভিন্ন খাবার খেয়ে থাকে।
মুসলমান, তফসিলি জাতি ও তফসিলি সম্প্রদায়ের বেশির ভাগ মানুষ গো-মাংস খায়। হিন্দুদের মধ্যে ৭০ শতাংশের বেশি তফসিলি গোত্র ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের, নিম্নবর্ণের ২১ শতাংশ এবং উচ্চবর্ণের মাত্র ৭ শতাংশ এই মাংস খেয়ে থাকে।
বিভিন্ন রাজ্যে গো-মাংস ভক্ষণকারীর সংখ্যায় ভিন্নতা রয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীরের মতো মুসলিম অধ্যুষিত রাজ্যের চেয়ে মেঘালয়ে গো-মাংস ভক্ষণকারীর সংখ্যা বেশি। সেখানে জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ গো-মাংস খায়। এরপর বৃহত্তর রাজ্য জম্মু ও কাশ্মীর, কেরালা, আসাম ও পশ্চিমবঙ্গ রয়েছে।