বিশ্বের প্রথম ট্যাটুধারী প্রধানমন্ত্রী!

Looks like you've blocked notifications!
কানাডার সদ্য নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, তাঁর বাম বাহুতে রয়েছে একটি ট্যাটু। ছবি : বিবিসি

শিরোনাম শুনে আঁতকে ওঠার দরকার নেই। প্রধানমন্ত্রী হলে কী হয়েছে? দিনশেষে তিনি তো একজন মানুষই, তাই না? তো সাধারণ মানুষের মতো একটু ট্যাটু করানোর সাধ তো তাঁর জাগতেই পারে!

তবে যাঁর করা বলছি, তিনি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর এই সাধ পূরণ করেননি। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে থেকেই তাঁর শরীরে আঁকা ছিল ট্যাটু। বলছি কানাডার সদ্য নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর কথা।

গতকাল থেকেই দেশ-বিদেশের গণমাধ্যমগুলোতে জাস্টিন ট্রুডোকে নিয়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা-বিশ্লেষণ। কেউ বলছেন, তাঁর মাধ্যমে কনজারভেটিভদের ১০ বছরের শাসনের অবসান হলো, কেউ বলছেন অসাধারণভাবে কনজারভেটিভ পার্টির নেতা স্টিফেন হারপারকে হারিয়েছেন জাস্টিন।

তবে এসবের পাশাপাশি টুইটার আর ফেসবুকে জাস্টিন ট্রুডোর বলিষ্ঠ শরীর আর বাম বাহুতে আঁকা ট্যাটু বা উল্কি নিয়েও আলোচনা কম হচ্ছে না। বলা হচ্ছে, বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশগুলোর নেতাদের মধ্যে তিনিই প্রথম যার শরীরে এত বড় করে উল্কি আঁকা রয়েছে। আর এই ট্যাটু দিয়েই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীদের মাতিয়ে রেখেছেন জাস্টিন।

সবার এত এত আগ্রহ দেখে নিজেই ট্যাটু সম্পর্কে জানিয়েছেন জাস্টিন ট্রুডো। এক টুইটে তিনি বলেন, ‘কানাডার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের আদিবাসী গোষ্ঠী হাইদার মানুষদের কাছ থেকে এই ট্যাটুর ধারণা নেওয়া হয়েছে। ট্যাটুতে হাইদাদের একটি দাঁড়কাকের ভেতরে পৃথিবীর ছবি রয়েছে। আমার ২৩ বছর বয়সে এই পৃথিবীর ট্যাটুটি করিয়েছিলাম আমি। পরে যখন আমার বয়স ৪০ হলো, তখন এর ওপর দাঁড়কাকটি এঁকে দেন রবার্ট ডেভিডসন।’

একটি দাতব্য সংস্থার জন্য নিজের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী প্যাট্রিক ব্র্যাজুর সঙ্গে মুষ্টিযুদ্ধের এক সৌজন্য প্রতিযোগিতায় অংশ নেন জাস্টিন। আর তখনই বিশ্ববাসীর নজরে পড়ে এই আকর্ষণীয় ট্যাটুটি।

হাইদা আদিবাসীদের এই চিহ্ণ ধারণ করার পেছনে কিছু কারণ আছে বলে মনে করছে বিবিসি। তাদের এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ১৯৭৬ সালে যখন জাস্টিনের বাবা পিয়ের ট্রুডো দ্বিতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছিলেন, তখন তাঁকে হাইদা সম্প্রদায়ের সম্মানীয় সদস্য নির্বাচিত করা হয়।

বিশ্বের উল্লেখযোগ্য কোনো নেতার শরীরে ট্যাটু আঁকা আছে কি না সে বিষয়টি জানা বেশ কঠিন। কারণ কারো শরীরে ট্যাটু থাকলেও বিশ্বের শক্তিশালী কোনো দেশের নেতা হয়ে যাওয়ার পর তিনি সেটা ঢেকে রাখতেই পছন্দ করবেন বেশি। তবে জাস্টিন এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। কারণ তিনি তাঁর ট্যাটু লুকিয়ে না রেখে তা প্রকাশ করতেই পছন্দ করেন বেশি। এ নিয়ে কোনো অস্বস্তি বা ভয়ও নেই তাঁর। এ বিষয়ে ট্যাটু-বিষয়ক ঐতিহাসিক আনা ফেলিসিটি বলেন, বর্তমানে কোনো বিশ্বনেতার শরীরে ট্যাটু আছে এই খবর তাঁর জানা নেই। তবে অতীতে অনেক নেতার শরীরেই ট্যাটু ছিল। রাশিয়ার সম্রাট দ্বিতীয় নিকোলাসের শরীরে আঁকা ছিল একটি ড্রাগনের ট্যাটু, যুগোস্লাভিয়ার সম্রাট আলেকজান্ডারের শরীরে ছিল বিরাট একটি ইগলের ছবি। এ ছাড়া ডেনমার্কের সম্রাট নবম ফ্রেডরিকের শরীরে ছিল নদীর ছবি। 

ট্যাটু গবেষক প্রফেসর কেভিন গ্যানন বলেন, ‘সাধারণভাবে মনে করা হয় যে, প্রধানমন্ত্রী হবেন খুবই চাপা স্বভাবের ব্যক্তি। কিন্তু জাস্টিন এর ব্যতিক্রম। তিনি তারুণ্যে ভরপুর। তাঁর চিন্তাভাবনা নতুন। আর এই ট্যাটুও তাঁর সেই ব্যতিক্রম চিন্তাকেই প্রতিফলিত করে।’