ইয়েমেনি শিশুর আকুতি, ‘আমাকে কবর দিয়েন না’

Looks like you've blocked notifications!
হাসপাতালের বিছানায় আর্তনাদরত শিশু ফরিদ শাওকি। ছবি : তাইজ সিটি ডট নেট

ইয়েমেনের একটি হাসপাতালে কাতরাচ্ছিল বোমার স্প্লিন্টারে আহত ফরিদ শাওকি। বিছানার এপাশ-ওপাশ নড়াচড়া করে চিকিৎসকদের উদ্দেশে বারবার বলছিল, ‘আমাকে কবর দিয়েন না।’ তার চোখ থেকে পানি ঝরছিল তখন। চিকিৎসক একগাল হেসে ফরিদের কোমল দুটি পায়ে হাত বুলিয়ে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু তাতেও আশ্বস্ত হতে পারছিল না সে।

যুদ্ধের বীভৎসতায় নয় বছর বয়সী শিশুটিও বুঝে গিয়েছিল, মৃত্যুর খুব কাছাকাছি সে। আর এর পরই কবর দেওয়া হবে তাকে। বাস্তবেও তা-ই হয়েছিল। মাথায় আঘাতজনিত কারণে কয়েকদিন পরই মৃত্যু হয় ফরিদের। এরপর তড়িঘড়ি করে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় তাকে।

চলতি মাসে হাসপাতালে ফরিদের আর্তনাদের দৃশ্যগুলো ধারণ করেছিলেন স্থানীয় ফটোসাংবাদিক আহমেদ বাশা। কয়েকদিন পর সিএনএনকে জানিয়েছিলেন সেই দুঃখগাথা।

ইয়েমেনের তৃতীয় বৃহত্তম শহর তাইজে নিজ বাসা থেকে ওই সাংবাদিক সিএনএনকে বলেন, ‘আমি মনে করেছিলাম, সে (ফরিদ) সামান্য আহত। আমি এটাও নিশ্চিত ছিলাম না যে, তার কথাগুলো রেকর্ড হচ্ছিল। আমি স্থিরছবি নিয়েই বেশি চিন্তিত ছিলাম।’

আহমেদ বাশা সিএনএনকে আরো বলেন, ফরিদের মৃত্যুর খবর শোনার পর তিনি ভিডিওটি প্রকাশ করেন। এর পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। ইয়েমেনিদের মৃত্যুর বিষয়ে বিশ্ব বিবেককে জাগ্রত করতে ফেসবুক, টুইটারে ‘ডোন্ট বেরি মি’ (আমাকে কবর দিও না) হ্যাশ ট্যাগ চালু হয়।

হুতি বিদ্রোহীদের দমনে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের হামলায় ছয় মাসেই যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে পরিণত হয়েছে ইয়েমেন। আর এতে করে ফরিদের মতো শত শত শিশুকে প্রাণ দিতে হয়েছে।

চলমান পরিস্থিতিকে ‘মানবিক বিপর্যয়’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে জাতিসংঘ। সংস্থাটির হিসাবে, যুদ্ধে বিমান হামলা, গোলাগুলি ও বিভিন্ন সংঘর্ষে  এখন পর্যন্ত হতাহত হয়েছে ২৭ হাজার মানুষ। জীবিত লোকজনের মধ্যে প্রতি পাঁচজনে একজন তীব্র পানি, খাদ্য, চিকিৎসা ও আশ্রয় সংকটে আছে।