যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় সিরিয়ায় শর্তসাপেক্ষ যুদ্ধবিরতি তুরস্কের
অবশেষে সিরিয়া সীমান্তে সামরিক অভিযান বন্ধ করতে সম্মত হয়েছে তুরস্ক। কুর্দি নেতৃত্বাধীন বাহিনীকে সিরিয়ার উত্তরাঞ্চল থেকে সরে যেতে দিতে একটি সাময়িক যুদ্ধবিরতি চুক্তি করতে রাজি হয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান।
সিরিয়ার সঙ্গে চলমান বিবাদ মেটাতে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় এরদোয়ানের সঙ্গে গতকাল বৃহস্পতিবার এক বৈঠকে বসেন। ওই বৈঠক শেষে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জানান, পাঁচ দিনের জন্য যুদ্ধবিরতি দিতে সম্মত হয়েছে তুরস্ক। ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স জানান, পাঁচ দিনের মধ্যে কুর্দি বাহিনীকে সীমান্ত এলাকা থেকে সরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করবে যুক্তরাষ্ট্র। তুরস্ক কর্তৃপক্ষ তাদের দেশে বসবাসরত প্রায় ২০ লাখ সিরীয় শরণার্থীকে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে একটি ‘সেফ জোন’ (নিরাপদ অঞ্চল) তৈরি করতে চায়। এই সেফ জোন সিরিয়ার প্রায় ৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত থাকবে। তুরস্কের কথিত এই সেফ জোনেই কুর্দি সেনারা বর্তমানে অবস্থান করছে।
তবে কুর্দি বাহিনী সীমান্ত থেকে সরে যেতে পুরোপুরি সম্মত হবে কি না, তা স্পষ্ট নয়।
সিরিয়ার সীমান্তবর্তী রাস আল-আইন ও তাল আবিয়াদ শহর দুটির মধ্যবর্তী এলাকায় তুর্কি ও কুর্দি বাহিনীর মধ্যে সংঘাত সবচেয়ে বেশি হচ্ছে। কুর্দি বাহিনীর এক কমান্ডার জানিয়েছেন, এই এলাকায় যুদ্ধ করা থেকে বিরত থাকবেন তাঁরা।
তবে মজলুম কোবানি নামের ওই কমান্ডার এও বলেন, ‘অন্য এলাকাগুলোর ক্ষেত্রে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে তা নিয়ে আমরা এখনো আলোচনা করিনি।’
এদিকে যুক্তরাজ্যভিত্তিক যুদ্ধ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সংস্থা ‘সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস’ জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির ঘোষণার পরেও রাস আল-আইনে যুদ্ধ চলছে।
সংস্থাটি আরো জানিয়েছে, তুর্কি ও কুর্দি বাহিনীর সংঘাতের জেরে সিরিয়ায় অন্তত ৭২ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া গত আট দিনে ঘরছাড়া হয়েছে তিন লাখের বেশি মানুষ।
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়া থেকে তাদের সেনা সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দেয়। এর পর থেকেই সমালোচকদের তোপের মুখে পড়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সমালোচকরা বলছেন, মার্কিন প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তের কারণেই সিরিয়ায় হামলা চালানোর ‘সবুজ সংকেত’ পেয়েছে তুরস্ক।