পানামা পেপারস ফাঁসে পতনের মুখে আইসল্যান্ডের সরকার

Looks like you've blocked notifications!
পার্লামেন্টের বাইরে বিক্ষোভ করছেন প্রায় ১০ হাজার মানুষ। ছবি : রয়টার্স

গোপনে স্ত্রীর নামে বিদেশে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থাকার খবর প্রকাশ হওয়ায় প্রবল তোপের মুখে পড়েছেন আইসল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সিগমুন্ডুর ডেভিড গানলগসন। দেশটির পার্লামেন্টের বিরোধী দল আস্থা ভোটের আহ্বান জানিয়েছে।

রাজধানী রিকইয়াভিকে পার্লামেন্টের বাইরে ১০ হাজার মানুষ বিক্ষোভ করছে, যে দেশটির জনসংখ্যাই মাত্র তিন লাখ ৩০ হাজার। বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দিচ্ছে, ড্রাম বাজাচ্ছে, ব্যারিকেড দিয়েছে এবং বাঁশি বাজাচ্ছে। কিছু মানুষের হাতে কলা রয়েছে, যার মাধ্যমে তারা কলা গণতন্ত্রের মধ্যে বাস করছেন বোঝাতে চাইছেন। প্রবল বিক্ষোভে পতনের মুখে পড়েছে সিগমুন্ডুর সরকার।

দেশটির আর্থিক সেবাবিষয়ক পরামর্শক আর্নথো হ্যালডারসন বলেন, ‘তিনি (প্রধানমন্ত্রী) পুরোপুরি মানুষের আস্থা হারিয়েছেন। আমাদের সম্পদ বিদেশের অ্যাকাউন্টে লুকিয়ে রাখেন... এভাবে চলছে দেশটা, আর্থিক সংকট থেকে পুনরুদ্ধারে তিনি কীভাবে দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার ভান করবেন?’

গত রোববার পানামা পেপারস শিরোনামে এক কোটি ১৫ লাখ নথি প্রকাশিত হয়। এতে বিশ্বের রাষ্ট্রনেতাসহ প্রভাবশালীদের নামে গোপন সম্পদ রাখার তথ্য রয়েছে। এঁদের মধ্যে আইসল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রী আনা সিগুরলগ পলসডট্টির পানামার আইনবিষয়ক প্রতিষ্ঠান মসাক ফনসেকার কাছ থেকে কোম্পানি কেনেন।

প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী গানলগসন তাঁর কোম্পানি পলসডট্টিরর কাছে বিক্রি করে দেন মাত্র এক মার্কিন ডলারে। এর এক বছর আইসল্যান্ড ভয়াবহ আর্থিক সংকটে পড়ে।

তবে এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বলা হচ্ছে, তাদের একটি যৌথ হিসাব থাকায় এই ভুল হয়েছে। তাদের মধ্যে সব সময়ই এটা স্পষ্ট ছিল যে সম্পদের মালিক প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রী। বিষয়টি খেয়াল করার পরপরই মালিকানা পরিবর্তন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে আইসল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পার্লামেন্ট অধিবেশনের আগে বলেন, ‘আমাকে কেউ পদত্যাগ করতে বলেনি আর আমি এ বিষয়ে ভাবছি না। সরকারের ভালো ফলাফল আছে। উন্নতি বেশ জোরালো এবং সরকারের কাজ শেষ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’ পরে বিক্ষোভের মুখে আজকের অধিবেশন বাতিল করা হয়।

বিরোধী দলের নেত্রী বিরগিট্টা জনসডট্টির বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাঁর পদত্যাগ করা হবে খুব স্বাভাবিক ও সঠিক সিদ্ধান্ত।’ সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট থেকে নির্বাচিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিয়ারনি বেনেডিকসন বলেন, ‘আইসল্যান্ডের মুদ্রা ও অর্থনীতিতে তিনি আস্থা হারিয়েছেন।’