উত্তর কোরিয়ায় বিয়ে-শেষকৃত্যে নিষেধাজ্ঞা!
রাষ্ট্রের তরফে ঘোষণা এসেছে, ভুল করেও এ সময় বিয়ে করবেন না। আর মরার কথা তো ভুলেই যান। দেশের বাইরে পা রাখতে চান? নাহ্! সে কথাও মাথা থেকে বের করে দিন। দেশে পার্টি কংগ্রেস শুরু হবে। না, এটি কট্টরপন্থী তালেবান বা আইএস জঙ্গিদের ফতোয়া নয়। এ রকম নিষেধাজ্ঞাই জারি করেছেন উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ শাসক কিম জং-উন।
ডেইলি মেইলের খবর অনুযায়ী, উত্তর কোরিয়ার শাসক দল ‘ওয়ার্কার্স পার্টি’র শেষ অধিবেশন হয়েছিল ৩৬ বছর আগে, ১৯৮০ সালে। কংগ্রেসের সেই অধিবেশনেই কিম ইল সুংয়ের থেকে ক্ষমতা হস্তান্তরিত হয়ে দেশের সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী হন বর্তমান শাসক কিমের বাবা কিম জং-ইল। বাবার মতোই এই অধিবেশনের মাধ্যমে নিজের ক্ষমতা আরো বাড়ানোর সুযোগ নিতে চান ৩৩ বছরের কিম জং-উন।
আর এই অধিবেশনের প্রস্তুতিতে বা তা চলাকালীন যাতে কোনো রকম ব্যাঘাত না ঘটে, সে জন্য সব রকমের প্রচেষ্টাই শুরু করেছেন তিনি।
এরই মধ্যে দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে ঘোষণা এসেছে, অধিবেশনের আগে বা চলাকালীন বিয়ে করা যাবে না। শেষকৃত্যের অনুষ্ঠান বন্ধ রাখতে হবে। এমনকি দেশের বাইরে যাওয়া বা বিদেশ থেকে দেশে ফেরাও যাবে না।
মূলত অধিবেশনকে ঘিরে উত্তর কোরিয়ায় বিয়ে ও শেষকৃত্য অনুষ্ঠানের মতো লোক জমায়েতমূলক অনুষ্ঠান সাময়িক নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বহুদিন বাদে দেশটির ক্ষমতাসীন দলের আসন্ন সম্মেলনকে কেন্দ্র করে রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ে চলছে কড়া সতর্কতা এবং নিরাপত্তা। সাধারণ মানুষের চলাফেরার স্বাধীনতার ওপরেও আরোপিত হয়েছে নিষেধাজ্ঞা।
তবে উত্তর কোরিয়া সরকারের একজন মুখপাত্র চেং জন হি বলেছেন, সাময়িক এই নিরাপত্তা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কোনোরকম দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা কমিয়ে আনার জন্য।
সূত্রের বরাতে ডেইলি মেইল জানিয়েছে, এই কংগ্রেসেই উত্তর কোরিয়াকে পরমাণু ক্ষমতাসম্পন্ন রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করার মনোবাসনা রয়েছে কিমের। এমনকি দেশের অগ্রগতি নিয়ে তাঁর ভবিষ্যৎ ভাবনাও জানাবেন কিম।
এদিকে, দেশের সুপ্রিম লিডারের ইচ্ছায় বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তার ঘেরাটোপ। শুধু তা-ই নয়, যখন তখন যার তার ঘরে ঢুকে তল্লাশি চালাচ্ছে কিমের সেনারা।
টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে কিম জানিয়েছেন, এই কংগ্রেসের অধিবেশন চলবে পাঁচ দিন। আর এর পরের ৭০ দিন ধরে চলবে দেশবাসীর আনুগত্যের ‘পরীক্ষা’। শাসক দল তথা কিম জং-উনের প্রতি আনুগত্য দেখাতে এই সময় উৎপাদন বাড়াতে অতিরিক্ত সময় ধরে কাজ করবেন তাঁরা।