মানুষের মাংস রপ্তানির ‘খবরে’ নড়ে উঠল চীন!

অনেককাল আগের কথা। আফ্রিকার দেশগুলোতে তখন দেখা মিলত নরখাদকদের। আজ এতদিন পরে এসে আফ্রিকার দেশ জাম্বিয়া চীনের বিরুদ্ধে তাদের নরখাদক বানানো হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছে।
জাম্বিয়ার অভিযোগ, মানুষের মরদেহ প্রক্রিয়াজাতকরণের পর শুকনো মাংস টিনজাত করে তা আফ্রিকায় রপ্তানি করছে চীন। এক সপ্তাহ ধরে আফ্রিকার দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলো এই বিষয়ে নিয়মিত প্রতিবেদন প্রকাশ করে আসছে। আর ওই প্রতিবেদনে রীতিমতো গা শিউরে ওঠা তথ্য এবং ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। এ ছাড়া দেশটির সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে বেশ সমালোচনা হচ্ছে বলেও সংবাদমাধ্যমের দাবি।
জাম্বিয়ার সংবাদমাধ্যমের সূত্র অনুসারে, দ্য টেলিগ্রাফ ‘মানুষের মাংস’ প্রক্রিয়াজাতকরণের ধাপগুলো জানিয়েছে। সংবাদ অনুযায়ী, প্রথমে চীনের বিভিন্ন কবরস্থান থেকে মৃতদেহ সংগ্রহ করা হয়। তারপর চলে এই দেহগুলোর প্রক্রিয়াজাতকরণ। ধাপে ধাপে সব প্রক্রিয়া শেষে শুকনো মাংস ক্যানবন্দি করে চীন থেকে জাম্বিয়াসহ আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে প্রক্রিয়াজাত মাংস হিসেবে রপ্তানি হয়। প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই মাংস রমরমিয়ে বিক্রিও হচ্ছে সুপারমার্কেটে। এ ছাড়া জানানো হয়েছে, চীন থেকে মানুষের মাংস রপ্তানি করা হয় কেবল আফ্রিকার দেশগুলোতেই।
চীনের মাংস কারখানায় কাজ করা শ্রমিকদের বরাত দিয়ে কাচেপা নামে জাম্বিয়ার একটি ট্যাবলয়েডে দাবি করা হয়, চীনে এই মুহূর্তে মৃতদেহ সৎকারের জায়গা অনেক কমে গেছে। আর সৎকারের খরচও বেড়ে গেছে অনেক। আর তাই অর্থনৈতিকভাবে কম উন্নত আফ্রিকায় গরুর মাংসের নামে টিনজাত মানুষের মাংস পাঠিয়ে দিচ্ছে চীন।
তবে চীনের পক্ষ থেকে এ দাবি অস্বীকার করা হয়েছে। এ ছাড়া এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে চীন। সংবাদে যে ছবিটি যুক্ত করা হয়েছে তা ফটোশপের কারসাজি বলেও দাবি করেছে দেশটি।
জাম্বিয়ায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াং ইউমিং এক বিবৃতিতে বলেছেন, স্থানীয় একটি ট্যাবলয়েডে কেবল প্রকাশ্যে গুজব ছড়ানো হচ্ছে যে চীন মানুষের মাংস টিনজাত করে আফ্রিকায় পাঠাচ্ছে। এটা পুরোপুরি অপপ্রচার এবং এ ধরনের অপপ্রচার আমাদের কাছে পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য। আমরা এ ধরনের কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানাচ্ছি।
এ ছাড়া প্রচলিত এই ‘গুজবের’ জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে জাম্বিয়া সরকারও। দেশটির উপপ্রতিরক্ষামন্ত্রী ক্রিস্টোফার মুলেঙ্গা বলেছেন, জাম্বিয়া ও চীনের মধ্যে উষ্ণ সম্পর্ক বিরাজমান। বিষয়টি বিবেচনায় জাম্বিয়া সরকার চীনের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করেছে।