ইরাক যুদ্ধ ছিল অবৈধ : প্রেসকট
ইরাক যুদ্ধে যুক্তরাজ্যের জড়িয়ে পড়া অবৈধ ছিল বলে দাবি করেছেন দেশটির সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী জন প্রেসকট।
আজ রোববার যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম সানডে মিররের এক নিবন্ধে জন প্রেসকট এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ইরাক যুদ্ধে জড়ানোর ‘সর্বনাশা সিদ্ধান্ত’ নিয়েই তাঁকে বাকি জীবন কাটাতে হবে। তিনি এখন ‘বিষণ্ণতা এবং ক্রোধে’র সঙ্গেই জাতিসংঘের সাবেক মহাসবিচ কফি আনানের সঙ্গে একমত যে, ইরাক যুদ্ধে জড়ানো ছিল অবৈধ।
ইরাক যুদ্ধের সময় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার সরকারের উপপ্রধানমন্ত্রী ছিলেন প্রেসকট।
বিবিসি জানায়, ইরাক যুদ্ধে জড়ানোর জন্য লেবার পার্টির পক্ষ থেকে দলটির প্রধান নেতা জেরেমি করবিন দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। করবিনের এমন সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেন জন প্রেসকট।
২০০৩ সালের মার্চে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশের ইরাক আক্রমণের আগে এক বিবৃতিতে টনি ব্লেয়ার তাঁকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘যাই ঘটুক না ঘটুন, আমি আপনার সঙ্গেই আছি।’ ওই বিবৃতিকে ‘বিধ্বংসী’ বলে দাবি করেন প্রেসকট।
প্রেসকট বলেন, ‘এমন কোনো দিন নেই, যখন আমি ইরাক যুদ্ধের সিদ্ধান্ত নিয়ে ভাবিনি। আমি ভেবেছি ব্রিটিশ সেনাদের কথা যাঁরা দেশের জন্য জীবন দিয়েছেন অথবা পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। সাদ্দাম হোসেনকে ক্ষমতা থেকে সরানোর জটিল সমীকরণে প্রাণ হারিয়েছে এক লাখ ৭৫ হাজারের বেশি সাধারণ মানুষ, এরপর প্যান্ডোরা বাক্স খুলে যায় (আরো মানুষের মৃত্যু হতে থাকে)।’
জন প্রেসকট আরো বলেন, ‘চিলকট তদন্ত প্রতিবেদনে ইরাক যুদ্ধের ভুলগুলো তুলে ধরা হয়েছে। টনি ব্লেয়ারের মন্ত্রিসভা চালানোর পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন জন প্রেসকট। তিনি দাবি করেন, সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়ে তাঁদের যৎসামান্য নথিপত্র দেওয়া হতো। ইরাক যুদ্ধ সম্পর্কে অ্যাটর্নি জেনারেল লর্ড গোল্ডস্মিথের সিদ্ধান্ত সম্পর্কেও তাঁদের বিস্তারিত জানানো হয়নি।
গত বুধবার যুক্তরাজ্যে প্রকাশিত হয়েছে ঐতিহাসিক ‘চিলকট রিপোর্ট’। এই তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০৩ সালে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটের সঙ্গে ইরাকের ওপর যুক্তরাজ্যের হামলার কোনো যৌক্তিক ভিত্তি নেই। ইরাকে মানববিধ্বংসী অস্ত্রের আশঙ্কার কথা বলা হলেও বিষয়টি খতিয়ে দেখা হয়নি এবং যুদ্ধ ছাড়াও শান্তিপূর্ণ উপায়ে এর সমাধান করা যেত বলে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়।