নিভছে না চিতার আগুন, মৃতের সংখ্যা ৬ হাজার ছাড়িয়েছে

Looks like you've blocked notifications!
ভূমিকম্পে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে বিধ্বস্ত ভবনের ধ্বংসস্তূপে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছেন পোল্যান্ডের উদ্ধারকর্মীরা। ছবি : এএফপি

শবদেহের মিছিল থামছে না নেপালে। নিভছে না চিতার আগুন। ভূমিকম্পে দেশটিতে নিহতের সংখ্যা ছয় হাজার ছাড়িয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার নেপাল সরকার জানিয়েছে, ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ছয় হাজার ১৩০-এ দাঁড়িয়েছে এবং আহত হয়েছে ১৩ হাজার ৮২৭ জন ।

নেপাল সরকারের আশঙ্কা, সংখ্যাটা ১০ হাজার ছাড়িয়ে যাবে।

গত ২৫ এপ্রিল, শনিবার দুপুরে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে রাজধানী কাঠমান্ডুসহ আশপাশের বিভিন্ন শহর ও গ্রামে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।

বিবিসি জানিয়েছে, কাঠমান্ডু এবং এর আশপাশের এলাকায় উদ্ধারকর্মীরা উদ্ধারকাজ করছেন। উদ্ধারকাজে স্থানীয়দের সঙ্গে যোগ দিয়েছে বিদেশি উদ্ধারকারী দল। কিন্তু ভূমিধস ও খারাপ আবহাওয়ার কারণে দুর্গম এলাকাগুলোতে উদ্ধারকর্মীরা পৌঁছাতে পারছেন না। একই কারণে ক্ষতিগ্রস্ত বেশ কিছু এলাকায় এখনো জরুরি সাহায্য পাঠানো সম্ভব হয়নি।

গতকাল বৃহস্পতিবার পেমবা লামা নামের ১৫ বছর বয়সী এক কিশোর ও কৃষ্ণা নামের এক নারীকে উদ্ধার করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার নেপাল ও ফ্রান্সের উদ্ধারকর্মীরা ২৮ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে উদ্ধার করেন।

পেমবা জানায়, ধ্বংসস্তূপের নিচে সে ভেজা কাপড় থেকে পানি আর মাখন খেয়ে পাঁচ দিন বেঁচে ছিল। বিধ্বস্ত ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে তিনটি মরদেহের সঙ্গে এই পাঁচ দিন কাটানোর পর উদ্ধার হয়েছে কৃষ্ণা।

এই ভয়াবহ দুর্যোগে সরকারের ভূমিকা নিয়ে ভূমিকম্পকবলিতদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। কিছু কিছু জায়গায় বিক্ষোভ হয়েছে। খাদ্য ও পানির অভাবের কারণে রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে মানুষ গ্রামের দিকে ছুটছে। অপর্যাপ্ত পরিবহন এবং ধীরগতিতে সাহায্য বিতরণের কারণে বিক্ষোভ করে ভূমিকম্পকবলিতরা। বিক্ষোভকারী ও দাঙ্গা পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে।

ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রেড ক্রস অ্যান্ড রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিস (আইএফআরসি) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলের কাছের শহর ও গ্রামগুলো প্রায় পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। এর মধ্যে কাঠমান্ডু উত্তর-পূর্বে সিন্দুপালচক অঞ্চল সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখানে ৪০ হাজার বাড়ি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গতকাল বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, এখানে নিহত হয়েছে এক হাজার ৪০০ জন।

আইএফআরসির এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রধান জগন চাপাগেইন বলেন, ‘আমাদের দল ঘুরে এসে জানিয়েছে, এ অঞ্চলের ছাওতারা এলাকার ৯০ শতাংশ বাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে। হাসপাতাল বিধ্বস্ত হয়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো স্বজনদের খুঁজছে মানুষ।’

চাপাগেইন আরো বলেন, যেসব স্থানে এখনো ত্রাণ-সহায়তা পৌঁছানো সম্ভব হয়নি, এসব স্থানের অবস্থাও একই রকম বলে মনে হচ্ছে।