ধর্ষণের দায়ে মৃত্যুদণ্ডের ২১ বছর পর নির্দোষ প্রমাণিত!
ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে ১৯৯৫ সালে চীনে নায় শুবিন নামের এক যুবকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছিল। ফায়ারিং স্কোয়াডে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সময় যুবকটির বয়স ছিল মাত্র ২০ বছর। মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ২১ বছর পর গতকাল শুক্রবার চীনের সর্বোচ্চ আদালত রায় দিয়েছেন, শুবিন ধর্ষক ছিলেন না। তিনি নির্দোষ।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএনের দাবি, মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ২১ বছর পর নায় শুবিনের নির্দোষ রায়ের মধ্য দিয়ে চীনের ফৌজদারি বিচারব্যবস্থার গভীর ত্রুটিগুলো প্রকাশ পেয়েছে।
আদালতের রায়ের পর নায় শুবিনের মা ঝাং হুয়ানঝি বলেন, ‘আমার ছেলেকে আজ আমি বলতে চাই তুমি ভালো মানুষ, তুমি নির্দোষ।’
শুক্রবার নায় শুবিনের রায়ের সময় চীনের আদালতে আবেগঘন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। রায়ে আদালতের বিচারক বলেন, শুবিনের মূল বিচারের সময় যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করা হয়নি। মৃত্যুদণ্ডের সময় হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্র এবং মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে যথেষ্ট সন্দেহ ছিল।
আদালতে রায় পড়ার সময় শুবিনের মা কান্নায় ভেঙে পড়েন বলে জানান তাঁর পক্ষের আইনজীবী লি শুটিং। তিনি বলেন, শুধু শুবিনের মা নন, আদালতে উপস্থিত সবাই আবেগী হয়ে পড়েন। তিনি নিজে দাঁড়িয়ে রায় স্বাগত জানাতে চেয়েছিলেন, তবে ঝাংকে সান্ত্বনা দেওয়ায় তিনি ব্যস্ত হয়ে পড়েন।
আদালত সূত্রে সিএনএন জানায়, নায় শুবিনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ১০ বছর পর ২০০৫ সালে ওয়াং শুজিন নামের এক ব্যক্তি ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগ স্বীকার করেন।
চীনের রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানায়, চীনের সুপ্রিম পিপলস কোর্ট সুবিনের আসল রায় পরিবর্তন করে তাঁকে নির্দোষ ঘোষণা করেছে। এর আগে চলতি বছরের জুনে রায় পুনর্বিবেচনার বিষয়টি ওই আদালতের পক্ষ থেকে শুবিনের মাকে জানানো হয়।
সিএনএন জানায়, নায় শুবিনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পর থেকেই তাঁর মা স্বপ্নে তাঁর ছেলের বাড়ি ফেরা দেখতেন। আর তাঁর বাবা নায় জিয়শেং আত্মহত্যার চেষ্টা করেও বেঁচে গেছেন।
শুক্রবার চীনের সংবাদমাধ্যম বেইজিং টাইমসকে শুবিনের বাবা নায় জিয়শেং বলেন, ‘আমার ছেলে এখন শান্তিতে ঘুমাতে পারবে।’