সুইডেনের ন্যাটোয় যোগদানের ইঙ্গিত দিলেন বাইডেন

Looks like you've blocked notifications!
জো বাইডেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গতকাল বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনীর একাডেমির অনুষ্ঠানে যোগ দেন। ছবি : এএফপি

সুইডেনের ন্যাটোয় যোগদানের ক্ষেত্রে বাধা দূর হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন৷। স্থানীয় বৃহস্পতিবার (১ জুন) মার্কিন বিমান বাহিনীর অ্যাকাডেমিতে দেওয়া ভাষণে এমন পূর্বাভাস দেন তিনি। নরওয়েতে ন্যাটোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনে ইউক্রেনের যোগদানের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে৷

মলদোভায় ইউরোপীয় দেশগুলোর সম্মেলনে যখন ইউক্রেনের ন্যাটোয় যোগদানের বিষয়টি আলোচনা করা হচ্ছে, তখন এই সামরিক জোটের সদস্য দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা নরওয়ের রাজধানী অসলোয় ইউক্রেন ছাড়াও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা বসেছেন৷ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন একইদিনে ন্যাটোর সম্প্রসারণ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত দিলেন৷

মার্কিন বিমান বাহিনীর অ্যাকাডেমিতে দেওয়া ভাষণে বাইডেন বলেন, ‘সুইডেন শিগগিরই ন্যাটোয় যোগ দিতে চলেছে৷’ অর্থাৎ এ বিষয়ে আপত্তি তুলে নিতে তুরস্কের সঙ্গে কোনো এক বোঝাপড়ার ইঙ্গিত দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট৷ গত সোমবার অবশ্য তিনি তুরস্কের সদ্য পুনর্নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট রেসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলে জয়ের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন৷ এরদোয়ান আবার এফ-১৫ যুদ্ধবিমান কেনার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন৷ অন্যদিকে, বাইডেন ন্যাটোয় সুইডেনের যোগদানের প্রশ্নে তুরস্কের আপত্তি তুলে নেওয়ার আহ্বান জানান৷ তবে যুদ্ধবিমান বিক্রির শর্তে দুই নেতার মধ্যে কোনো বোঝাপড়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছে হোয়াইট হাউস৷ আগামী জুলাই মাসে লিথুয়ানিয়ার রাজধানী ভিলনিউসে ন্যাটোর শীর্ষ সম্মেলনে দুই নেতার সাক্ষাৎ হওয়ার কথা রয়েছে৷

বৃহস্পতিবার (১ জুন) বিমানবাহিনীর নতুন সদস্যদের উদ্দেশে বাইডেন বলেন, ‘রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সামরিক জোট ন্যাটোর মধ্যে ভাঙন ধরানোর যে চেষ্টা চালিয়েছিলেন, তা ব্যর্থ হয়েছে৷ এই জোট বরং আরও চাঙা হয়ে উঠেছে৷’ ইউক্রেনের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের লাগাতার সমর্থন ও সহায়তার অঙ্গীকার করেন তিনি৷

অসলোয় ন্যাটো পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনে মহাসচিব ইয়েন্স স্টলটেনবার্গও সুইডেনের সদস্যপদ নিয়ে মন্তব্য করেছেন৷ তিনি হাঙ্গেরি ও তুরস্কের উদ্দেশে এ বিষয়ে আপত্তি তুলে নেওয়ার অনুরোধ জানান৷ ন্যাটোর অন্যান্য দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরাও এই দুই দেশের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছেন৷ স্টলটেনবার্গ তুরস্কে গিয়ে যত দ্রুত সম্ভব বাধা দূর করতে চান৷ তিনি মনে করিয়ে দেন, তুরস্কের সংশয় দূর করতে বৃহস্পতিবার থেকেই সুইডেনে সন্ত্রাসবিরোধী নতুন আইন কার্যকর হয়েছে৷

অসলোর সম্মেলনে স্টলটেনবার্গ ইউক্রেনের প্রতি অবিচল সমর্থন জানিয়েছেন৷ তাঁর মতে, দেশটি এবার রাশিয়ার বিরুদ্ধে পালটা সামরিক অভিযান চালাতে প্রস্তুত৷ তিনি ইউক্রেনের দীর্ঘমেয়াদী প্রতিরক্ষা জোরদার করতে ন্যাটোর সহায়তার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন৷ স্টলটেনবার্গ আরও বলেন, যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর ইউক্রেনের নিরাপত্তার গ্যারেন্টি (নিশ্চয়তা) পাওয়া উচিত৷

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেনও ইউক্রেনের জন্য আরও রাজনৈতিক ও বাস্তব সহায়তার ইঙ্গিত দেন৷ তিনি বলেন, ‘এখনই পূর্ণ মর্যাদার সদস্য হিসেবে ইউক্রেনের ন্যাটোয় যোগদানের পক্ষে ঐকমত্য সম্ভব না হলেও দেশটির সঙ্গে সহযোগিতার নতুন কাঠামোর বিষয়ে ভাবনা-চিন্তা চলছে৷’

লিথুয়ানিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী গাব্রিয়েলুস লান্ডসবার্গিস ন্যাটোয় ইউক্রেনকে আরও সম্পৃক্ত করতে স্পষ্ট রূপরেখার আহ্বান জানিয়েছেন৷ জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক বলেন, ‘ন্যাটো এমন কোনো দেশকে সদস্য করার বিষয়ে আলোচনা করতে পারে না, যেটি যুদ্ধের মাঝে রয়েছে৷’ জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসও ইউক্রেনের জন্য ভিন্ন কাঠামোর প্রস্তাব দিয়েছেন৷