ভারতে ট্রেন দুর্ঘটনায় ২৯০ জনের প্রাণহানি : তিন রেল কর্মকর্তা গ্রেপ্তার
ভারতের উড়িষ্যায় গত জুন মাসে সবচেয়ে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘনায় ২৯০ জনের বেশি মানুষ নিহত হওয়ার ঘটনায় তিন রেল কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে দুজন সিগন্যাল ইঞ্জিনিয়ার ও একজন টেকনিশিয়ান। শুক্রবার (৭ জুলাই) তিন কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারের কথা জানায় ভারতের ফেডারেল ক্রাইম এজেন্সি।
সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই) এক বিবৃতিতে জানায়, গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে হত্যা ও প্রমাণ বিনষ্টের অভিযোগে আনা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।
পূর্ব উড়িষ্যা রাজ্যে জুনে ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছিল। একটি যাত্রী বোঝাই ট্রেন ভুলবশত একটি সংলগ্ন লুপ লাইনে ঘুরিয়ে দেওয়ার ফলে এটি লোহা আকরিক বোঝাই একটি স্থির মালবাহী ট্রেনকে ধাক্কা দেয়। এতে যাত্রীবাহী ট্রেনের বগিগুলো অন্য ট্র্যাকে লাইনচ্যুত হয়ে বিপরীত দিকে চলমান একটি পাসিং ট্রেনকে আঘাত করে। সংঘর্ষের সময় দুটি যাত্রীবাহী ট্রেনে দুই হাজার ২৯০ জনেরও বেশি লোক ছিল। আহত হয়েছেন প্রায় এক হাজার মানুষ।
দুর্ঘটনার পর ভারতের রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব বলেছিলেন, দুর্ঘটনার কারণ সিগন্যালিং সিস্টেমের সঙ্গে সম্পর্কিত।
ভারত ১ দশমিক ৪২ বিলিয়ন জনসংখ্যার দেশ। দেশটিতে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক যুগে নির্মিত বিশ্বের অন্যতম বিস্তৃত এবং জটিল রেলপথ রয়েছে। ৬৪ হাজার কিলোমিটারের বেশি লাইন, ১৪ হাজার যাত্রীবাহী ট্রেন এবং আট হাজার স্টেশন রয়েছে দেশজুড়ে। কয়েক দশকের অব্যবস্থাপনা এবং অবহেলার কারণে দুর্বল হয়ে পড়েছে দেশটির রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা।
নিরাপত্তা উন্নত করার প্রচেষ্টা সত্ত্বেও, প্রতি বছর কয়েকশ দুর্ঘটনা ঘটে এবং বেশির ভাগ এই ধরনের দুর্ঘটনার জন্য মানবিক ত্রুটি বা পুরোনো সংকেত সরঞ্জামকে দায়ী করা হয়।
জুনের দুর্ঘটনাটি ১৯৯৫ সালের পর থেকে ভারতের সবচেয়ে মারাত্মক ছিল। তখন নয়াদিল্লির কাছে দুটি ট্রেনের সংঘর্ষে ৩৫৮ জন মারা গিয়েছিল। এরপর ২০১৬ সালে একটি যাত্রীবাহী ট্রেন ইন্দোর ও পাটনা শহরের মধ্যে চলার সময় লাইনচ্যুত হয়ে ১৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল।