জার্মানিতে জাতীয় নির্বাচনে ভোট আজ

জার্মানিতে আজ আগাম জাতীয় নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলছে৷ স্থানীয় সময় আজ রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে শুরু হয় ভোটগ্রহণ, যা বিকেল ৬টা পর্যন্ত চলবে৷
গত নভেম্বরে চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজের সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এসপিডি) নেতৃত্বাধীন জোট সরকার ভেঙে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে নির্ধারিত সময়ের আগেই মধ্যবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে৷ জনমত জরিপে জার্মানির মধ্য-ডানপন্থি দল ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়ন (সিডিইউ) এগিয়ে রয়েছে৷
জার্মানির এই সংসদ নির্বাচনে প্রায় ছয় কোটি ভোটার আগামী চার বছরের জন্য তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করছেন৷ বার্লিনভিত্তিক নির্বাচন গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইনফ্রাটেস্ট ডিমাপ পরিচালিত সমীক্ষায় দেখা গেছে, মধ্য-ডানপন্থি দল সিডিইউ এবং তাদের বাভারিয়ান সহযোগী দল খ্রিস্টীয় সামাজিক দল (সিএসইউ) এগিয়ে রয়েছে৷ এই জোটের দলগুলো কট্টর ডানপন্থি জার্মানির বিকল্প এএফডির তুলনায় ১০ ভাগ এগিয়ে রয়েছে৷
২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে এএফডি জার্মানির পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য সাক্সনি, থুরিঙ্গিয়া ও ব্রান্ডেনবুর্গের আঞ্চলিক নির্বাচনে বেশ ভালো করেছে৷ সরকারে থাকা সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এসপিডি) এবং সবুজ দল তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে রয়েছে৷ আগের সরকারের ত্রিদলীয় জোটের অংশ মুক্ত গণতন্ত্রী দল (এফডিপি) তালিকার শেষের দিকে রয়েছে৷
কে হবেন চ্যান্সেলর?
ভোটাররা সরাসরি চ্যান্সেলর নির্বাচন করেন না, বরং তারা বুন্ডেসটাগ বা সংসদের নিম্নকক্ষের সদস্যদের নির্বাচন করেন৷ যদি কোনো দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পায়, তাহলে সর্বাধিক আসনপ্রাপ্ত দল একটি সরকার গঠনের চেষ্টা করে৷ সাধারণত সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনকারী জোটের প্রধান দল তাদের চ্যান্সেলর প্রার্থীকে সরকারপ্রধান হিসেবে মনোনীত করে৷
বর্তমানে সিডিইউ-সিএসইউর চ্যান্সেলর প্রার্থী ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎস এই লড়াইয়ে সবচেয়ে এগিয়ে আছেন৷ তবে তার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেয়েছে মূলত বর্তমান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস (এসপিডি) এবং ভাইস চ্যান্সেলর রবার্ট হাবেকের (সবুজ দল) জনপ্রিয়তা হ্রাসের কারণে৷
জার্মান চ্যান্সেলর কীভাবে নির্বাচিত হন?
প্রতিটি দল নির্বাচনের আগে তাদের শীর্ষ প্রার্থী মনোনীত করে৷ নির্বাচনের পর দলগুলো সরকার গঠনের জন্য জোট গঠনের চেষ্টা করে৷ জার্মান প্রেসিডেন্ট সংসদে চ্যান্সেলর পদের জন্য একজন প্রার্থী মনোনীত করেন৷ সংসদ সদস্যদের গোপন ভোটে নির্ধারিত হয় চ্যান্সেলর৷
জার্মানির নির্বাচন ব্যবস্থা কেমন?
জার্মানির নির্বাচন ব্যবস্থা গণতন্ত্র ও আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের সমন্বয়ে গঠিত৷ প্রত্যেক ভোটার দুটি ভোট দেন—প্রথম ভোটটি সরাসরি একজন সংসদ সদস্য নির্বাচনের জন্য এবং দ্বিতীয় ভোটটি একটি রাজনৈতিক দলের জন্য৷
দ্বিতীয় ভোটই মূলত সংসদে দলগুলোর অনুপাত নির্ধারণ করে৷ কোনো দল যদি ৫ শতাংশ বা তার বেশি ভোট পায়, তবে তারা নিশ্চিতভাবে সংসদে আসন পায়৷ জার্মানির এই নির্বাচনের ফলাফল ভবিষ্যৎ ইউরোপীয় রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা৷