এস এম সুলতানের ৯৭তম জন্মবার্ষিকী আজ
ছিলেন চিত্রকর, সুরসাধক ও বাঁশিবাদক। তাঁর পুরো নাম শেখ মোহাম্মদ সুলতান। তবে এস এম সুলতান নামেই তিনি অধিক পরিচিত। বিশ্ববরেণ্য চিত্রশিল্পী এস এম সুলতানের ৯৭তম জন্মবার্ষিকী আজ।
আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চিত্রশিল্পী এস এম সুলতান ১৯২৪ সালের ১০ আগস্ট নড়াইলের চিত্রা নদীর পাড়ের নিভৃত পল্লি মাছিমদিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। চেহারার সঙ্গে মিলিয়ে পিতামাতা আদর করে নাম রাখেন লাল মিয়া।
৭০ বছরের বোহেমিয়ান জীবনে চিত্রশিল্পী সুলতান তাঁর তুলির আঁচড়ে দেশ, মাটি, মাটির গন্ধ আর ঘামে ভেজা মেহনতি মানুষের সঙ্গে নিজেকে একাকার করে সৃষ্টি করেন বিশ্ববিখ্যাত সব চিত্র।
এস এম সুলতান জীবনের মূল সুর-ছন্দ খুঁজে পেয়েছিলেন বাংলাদেশের গ্রামীণ জীবন, কৃষক ও কৃষিকাজের মধ্যে। আবহমান বাংলার সেই ইতিহাস-ঐতিহ্য, দ্রোহ-প্রতিবাদ, বিপ্লব-সংগ্রাম এবং বিভিন্ন প্রতিকূলতার মধ্যেও টিকে থাকার ইতিহাস তাঁর শিল্পকর্মকে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করেছে।
সুলতানের ছবিতে গ্রামীণ জীবনের পরিপূর্ণতা, প্রাণপ্রাচুর্যের পাশাপাশি শ্রেণির দ্বন্দ্ব এবং গ্রামীণ অর্থনীতির হালও ফুটে উঠেছে। তাঁর চিত্রে বিশ্বসভ্যতার কেন্দ্র হিসেবে গ্রামের মহিমা উঠে এসেছে এবং কৃষককে এই কেন্দ্রের রূপকার হিসেবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
১৯৫০ সালে ইউরোপ সফরের সময় যৌথ প্রদর্শনীতে এস এম সুলতানের ছবি সমকালীন বিশ্ববিখ্যাত চিত্রশিল্পী পাবলো পিকাসো, ডুফি, সালভাদর দালি, পল ক্লি, কনেট, মাতিসের ছবির সঙ্গে প্রদর্শিত হয়।
চিত্রশিল্পের অবদানস্বরূপ কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ম্যান অব দ্য ইয়ার’, নিউইয়র্কের বায়োগ্রাফিক্যাল সেন্টার থেকে ‘ম্যান অব অ্যাচিভমেন্ট’ এবং এশিয়া উইক পত্রিকা থেকে ‘ম্যান অব এশিয়া’ পুরস্কার পান এস এম সুলতান। এ ছাড়া ১৯৮২ সালে একুশে পদক, ১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ সরকারের রেসিডেন্ট আর্টিস্ট স্বীকৃতি, ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ চারুশিল্পী সংসদ সম্মাননা এবং ১৯৯৩ সালে স্বাধীনতা পদকসহ অসংখ্য পদকে ভূষিত হয়েছেন তিনি।
এস এম সুলতান ১৯২৪ সালের ১০ আগস্ট নড়াইল শহরের মাছিমদিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৯৪ সালের ১০ অক্টোবর যশোর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে মারা যান। ৯৭তম জন্মবার্ষিকীতে এ চিত্রশিল্পীকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছেন চিত্রানুরাগীরা।