ঐতিহ্য প্রকাশ করছে শতাধিক বই
অমর একুশে বইমেলার ৩৮তম আসর শুরু হচ্ছে আজ। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ এবং ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রায় সাড়ে সাত লাখ বর্গফুট জায়গাজুড়ে ব্যবস্থা করা হয়েছে এ মেলার।
আজ মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি বইমেলা উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-২০২১ প্রদান করা হবে।
প্রকাশনা সংস্থা ঐতিহ্য ২০০০ সাল থেকে নিয়মিত এই মেলায় অংশ নিচ্ছে। প্রতি বছরই ঐতিহ্য পাঠকদের কাছে বৈচিত্র্যপূর্ণ ও ভিন্ন স্বাদের নানা ধরনের বই নিয়ে হাজির হয়। এবারের মেলাকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে ঐতিহ্য’র প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন।
এ বছর ঐতিহ্য শতাধিক নতুন বই নিয়ে হাজির হচ্ছে। পূর্বে প্রকাশিত সহস্রাধিক বইসহ এবার প্রায় অর্ধশত বিষয়ের ওপর শতাধিক নতুন বই থাকছে মেলায় ঐতিহ্যের ৩৫ নম্বর প্যাভিলিয়নে।
শুধু বই প্রকাশ নয়, ঐতিহ্য ইতোমধ্যে বইকে সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে চালু করেছে বই বিপণন প্রতিষ্ঠান ‘নির্বাচিত’ নামে একটি বুক চেইন শপ। বইমেলায় প্রকাশিত সেরা বইগুলোও পাওয়া যাবে নির্বাচিত’র আটটি বিক্রয়কেন্দ্রে।
ঐতিহ্য প্রকাশনীর প্রধান নির্বাহী ও স্বত্বাধিকারী আরিফুর রহমান নাইম জানিয়েছেন, এবার অন্যতম সেরা প্রকাশনা হতে চলেছে ১৯ হাজারের বেশি পৃষ্ঠার ৩৫ খণ্ডে সৈয়দ শামসুল হক রচনাসমগ্র। এ ছাড়া রচনাবলি, মুক্তিযুদ্ধ সুবর্ণজয়ন্তী গ্রন্থমালা, ভাষা আন্দোলন, প্রবন্ধ-গবেষণা, জীবনী-স্মৃতিচারণ, ইতিহাস, রাজনীতি, অভিধান, অর্থনীতি, প্রকৃতি ও বিজ্ঞান, ধর্ম, চলচ্চিত্র, গজল, ভ্রমণ, অনুবাদসাহিত্য, খেলাধুলা, স্বাস্থ্য, উপন্যাস, গল্প, কবিতাসহ নানা বিষয়ে অনন্য সব বই প্রকাশ করতে যাচ্ছে ঐতিহ্য।
সৈয়দ শামসুল হকের প্রকাশিত-অপ্রকাশিত সমুদয় লেখা নিয়ে ১৯ হাজারের বেশি পৃষ্ঠায় সাজানো হয়েছে রচনাসমগ্রটি। বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে থাকছে লেখকের অনূদিত এবং এখন পর্যন্ত অপ্রকাশিত হোমারের অডিসি, জেফ্রি চসারের ক্যান্টারবারি টেলস-এর নির্বাচিত অংশসহ বেশ কিছু ইংরেজি ক্লাসিক। এই রচনাসমগ্রের অন্যতম আকর্ষণ ব্রিটিশ কবি স্টিফেন স্পেন্ডার, কবি শামসুর রাহমান ও বেলাল চৌধুরীকে লেখা সৈয়দ শামসুল হকের চিঠি। পাশাপাশি স্ত্রী, পুত্র ও কন্যাকে লেখা শতাধিক অপ্রকাশিত পত্র, যা অন্তরঙ্গ সৈয়দ শামসুল হককে পাঠকের কাছে উপস্থাপন করবে। এ ছাড়া সৈয়দ শামসুল হক রচিত স্মরণীয় বাংলা গানের পাশাপাশি তাঁর বেশ কিছু চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্যও এ সমগ্রে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
কথাসাহিত্যিক রশীদ করীমের সব গ্রন্থিত-অগ্রন্থিত রচনা নিয়ে আড়াই হাজারের বেশি পৃষ্ঠায় পাঁচ খণ্ডে প্রকাশ হয়েছে ‘রশীদ করীম-রচনাবলি’। রশীদ করীম বাংলা সাহিত্যের এক বিশিষ্ট কথাশিল্পীর নাম।
তরুণ রশীদ করীমের গল্প পড়ে মুগ্ধ হয়েছিলেন বুদ্ধদেব বসু। রশীদ করীমের ‘উত্তম পুরুষ’ উপন্যাস দেশভাগপূর্ব বাঙালি মুসলিম সমাজের বিশ্বস্ত দলিল। ‘আমার যত গ্লানি’ আর ‘মায়ের কাছে যাচ্ছি’ উপন্যাস যেন মহান মুক্তিযুদ্ধের মহাকাব্যিক দলিল। কথাসাহিত্যের পাশাপাশি রশীদ করীম একজন বিশিষ্ট প্রাবন্ধিকও। রবীন্দ্রসংগীত থেকে ক্রিকেট বা টেনিস খেলার খুঁটিনাটি তাঁর প্রবন্ধে উঠে আসে অনায়াসে।