আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর ৮৯তম জন্মবার্ষিকী পালিত
সাহিত্যিক-সাংবাদিক আবদুল গাফফার চৌধুরীর ৮৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বাংলা অ্যাকাডেমি গতকাল মঙ্গলবার ১২ ডিসেম্বর সকাল ১১ টায় একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বাংলা অ্যাকাডেমির সংস্কৃতি পত্রিকা ও মিলনায়তন বিভাগের পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) ড. সরকার আমিন। ‘আবদুল গাফফার চৌধুরীর ছোটোগল্প : বিষয় ও প্রকরণ’ শীর্ষক বক্তব্য প্রদান করেন প্রাবন্ধিক ও গবেষক ড. রকিবুল হাসান।
অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মোহাম্মদ হেলাল হোসেন। সভাপতিত্ব করেন বাংলা অ্যাকাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বাংলা অ্যাকাডেমির সচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ড. মো. হাসান কবীর। অনুষ্ঠানের শুরুতে আবদুল গাফফার চৌধুরী রচিত অমর একুশের গান পরিবেশিত হয়।
ড. সরকার আমিন বলেন, আবদুল গাফফার চৌধুরী বাংলাদেশের ইতিহাসে একজন স্মরণীয় নাম। আমাদের সাহিত্য ও সাংবাদিকতাকে তিনি উচ্চমাত্রায় উন্নীত করেছেন।
ড. রকিবুল হাসান বলেন, আবদুল গাফফার চৌধুরীর সাংবাদিক এবং কলাম-লেখক পরিচিতির আড়ালে যেন চাপা পড়ে গেছে তাঁর কথাসাহিত্যিক পরিচয়। অথচ তিনি বাংলা ছোটোগল্পের কুশলী কারুকারদের একজন। তাঁর ‘সম্রাটের ছবি’এবং এ ধরনের আরও বেশকিছু গল্পে উপনিবেশিত সমাজ এবং মানুষের মনোলোক অসাধারণ ব্যঞ্জনায় উদ্ভাসিত হয়েছে। তিনি ধর্মীয় ও সামাজিক রক্ষণশীলতার নানা চিত্র তাঁর নানা ছোটোগল্পে শৈল্পিক প্রতিবাদ হিসেবে সার্থকভাবে উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছেন।
মোহাম্মদ হেলাল হোসেন বলেন, আবদুল গাফফার চৌধুরী একজন সচেতন নাগরিক এবং লেখক হিসেবে সমকালীন রাজনৈতিক অসঙ্গতির বিরুদ্ধে সোচ্চার কলম যোদ্ধার ভূমিকা পালন করেছেন। তাঁর বর্ণাঢ্য জীবন উত্তর প্রজন্মের চির-অনুপ্রেরণার উৎস।
কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন, আবদুল গাফফার চৌধুরী আমাদের সাহিত্য ভুবনে এবং জাতীয় জীবনের এক অবিস্মরণীয় নাম। তিনি কবিতা ও কথাসাহিত্যে বৈশিষ্ট্যপূর্ণ অবদান রেখেছেন কিন্ত একুশের গানের কালজয়ী রচয়িতা হওয়ায় তাঁর অন্য সব পরিচিতি যেন ম্লান হয়ে পড়ে। আমাদের একুশ এখন সারাবিশ্বের, আবদুল গাফফার চৌধুরী রচিত একুশের গানও এখন পৃথিবীব্যাপী মাতৃভাষাপ্রেমী মানুষের মর্মবাণী।
ড. মো. হাসান কবীর বলেন, আবদুল গাফফার চৌধুরী একুশের অমর গানের রচয়িতা হিসেবে বাংলার ইতিহাসে চিরস্থায়ী আসন লাভ করেছেন। বাঙালি জাতি ও বাংলাদেশ তাঁকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলা একাডেমির উপপরিচালক ড. সাইমন জাকারিয়া।