মেলার ১১তম দিনে এসেছে ৯১ নতুন বই

অমর একুশে বইমেলার ১১তম দিন ছিল মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি)। এদিন মেলায় নতুন বই এসেছে ৯১টি। এর মধ্যে গল্পের বই ১১টি, উপন্যাস ১০টি, প্রবন্ধ চারটি, কবিতা ৩৩টি, শিশুসাহিত্য সাতটি, জীবনী চারটি, মুক্তিযুদ্ধ একটি, নাটক একটি, বিজ্ঞান চারটি, ইতিহাস তিনটি, রাজনীতি একটি, গণঅভ্যুত্থান তিনটি, ধর্মীয় একটি, অনুবাদ দু’টি ও অভিধান একটিসহ অন্যান্য বই রয়েছে তিনটি।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাতে বাংলা একাডেমির জনসংযোগ উপবিভাগ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বইমেলা শুরু হয় বিকেল ৩টায়। বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘আদর্শায়িত কল্পলোক ও শাহেদ আলীর দ্বিধাচিত্ত মন’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শিবলী আজাদ। আলোচনায় অংশ নেন মোস্তাক আহমাদ দীন এবং সভাপতিত্ব করেন চঞ্চল কুমার বোস।
প্রাবন্ধিক বলেন, শাহেদ আলীর গল্পে যেমন দার্শনিক প্রতীতি রূপায়ণের চেষ্টা রয়েছে, তেমনি রয়েছে সামাজিক বৈষম্য আর অনাচার ফুটিয়ে তোলার প্রয়াস। তার রচনাগুলো উত্তাল সময়, ঝঞ্ঝা-বিক্ষুব্ধকালের বৌদ্ধিক ও নান্দনিক প্রতীতির প্রতি লেখকের এক ধরনের প্রতিক্রিয়া। সমকালের অন্যান্য লেখকের মতো তিনি উচ্চকণ্ঠী নন। তার গল্পে নেই হুল্লোড় কিংবা মতাদর্শিক উচ্ছ্বাস। বিমূর্ত দার্শনিকতা ও সৌন্দর্য অনুসন্ধান শাহেদ আলীর লেখার গুরুত্বপূর্ণ এক বৈশিষ্ট্য। তার গল্পে উঠে আসে গ্রামীণ মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত, হতদরিদ্র প্রান্তিক চাষি এবং শহুরে মুটে-ভিখিরি চরিত্রগুলো। শিল্পের দাবি অক্ষুণ্ন রাখার ক্ষেত্রে শাহেদ আলী যথেষ্ট সফল একজন লেখক ।
আলোচক বলেন, রাজনীতি-সচেতন সক্রিয় ব্যক্তিত্ব শাহেদ আলী সাহিত্যের বিভিন্ন অঙ্গনে তার প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। তবে তার রাজনৈতিক ও সৃষ্টিশীল জীবনকে কখনও একাত্ম করেননি। এমনকি তার গল্পের মধ্যে কঠোর নীতিবোধও আরোপ করেননি। তার রচনায় জীবন বাস্তবতার যে চিত্র তিনি এঁকেছেন সেখানে নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত শ্রেণির উপস্থিতিই আমাদের চোখে পড়ে। ভাষার ক্ষেত্রে তিনি লোকজ, আরবি, ফারসি, উর্দু শব্দরাজিকে সাবলীলভাবে তার সাহিত্যে স্থান দিয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে চঞ্চল কুমার বোস বলেন, শাহেদ আলীর রচনায় বাংলার কৃষিভিত্তিক জীবনের ছন্দ, সুর, কথা ও উপকথা ধরা পড়ে। তার লেখার অনুষঙ্গ হলো সাধারণ বাঙালি ঘরের সাংস্কৃতিক উপকরণ। তার বিস্তৃত সাহিত্যকর্ম নিবিড় পাঠ ও গভীর পর্যালোচনার দাবি রাখে।
আজ লেখক বলছি মঞ্চে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন- নাসির আলী মামুন এবং মামুন সারওয়ার। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আবৃত্তি করেন কবি মুস্তাফা মজিদ। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী শফিকুল ইসলাম বাহার এবং আনজুমান আরা।

এছাড়া এদিন ছিল সালমা মাহবুবের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন বাংলাদেশ সোসাইটি ফর দা চেঞ্জ অ্যান্ড অ্যাডভোকেসি নেক্সাস (বি-স্ক্যান) এর পরিবেশনা।
এতে সঙ্গীত পরিবেশন করেন শিল্পী মো. সালমান, মাহমুনুল হক সিদ্দিক, জাকির হোসেন আখের, সঞ্জয় কুমার দাস, শরণ বড়ুয়া, শ্রাবন্তী আক্তার জেরিন, নুরুন্নাহার হায়াত এবং মো. শাহীনুর ইসলাম।
আজ বুধবার বইমেলার সময়সূচি
আজ বুধবার অমর একুশে বইমেলার ১২তম দিনে মেলার গেইট খুলবে বিকেল ৩টায়। মেলা চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। এদিন বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘গণঅভ্যুত্থান ২০২৪-এর কবিতা’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এদিন প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন হাসান রোবায়েত। আলোচনায় অংশ নেবেন মঈন জালাল চৌধুরী এবং আশফাক নিপুন। সভাপতিত্ব করবেন কবি ফরহাদ মজহার।