আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলেসহ পাঁচ আসামির রায় ১২ অক্টোবর
রাজধানীর বনানীর রেইনট্রি হোটেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রীকে ধর্ষণের মামলায় আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলে সাফাত আহমেদসহ পাঁচ আসামির রায় ঘোষণার জন্য আগামী ১২ অক্টোবর দিন নির্ধারণ করেছেন আদালত। এ ছাড়া পাঁচ আসামির জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আজ রোববার ঢাকার ৭ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোসাম্মৎ কামরুন্নাহার এই আদেশ দেন।
এ বিষয়ে বাদীপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহম্মেদ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, আজ বিচারক পাঁচ আসামির জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। এ মামলায় এ পর্যন্ত মোট ৪৭ জন সাক্ষীর মধ্যে এ পর্যন্ত ২২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে।
২০১৭ সালের ৮ জুন ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে সাফাতসহ পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনের (ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার) পরিদর্শক ইসমত আরা এ্যানি। অভিযোগপত্রের অন্য আসামিরা হলেন আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলের বন্ধু নাঈম আশরাফ, সাদমান সাকিফ, সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল হোসেন ও দেহরক্ষী রহমত আলী।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, রেইনট্রি হোটেলে জন্মদিনের পার্টিতে ডেকে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ এনে ২০১৭ সালের ৬ মে বনানী থানায় মামলা করেন এক ছাত্রী।
ওই মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০১৭ সালের ২৮ মার্চ রাত ৯টা থেকে পরের দিন সকাল ১০টা পর্যন্ত আসামিরা মামলার বাদী এবং তাঁর বান্ধবী ও বন্ধু শাহরিয়ারকে আটক রাখেন। অস্ত্র দেখিয়ে ভয়-ভীতি প্রদর্শন ও অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন। বাদী ও তাঁর বান্ধবীকে জোর করে ঘরে নিয়ে যান আসামিরা।
এজাহারে আরও বলা হয়, বাদীকে সাফাত আহমেদ একাধিকবার এবং বান্ধবীকে নাঈম আশরাফ একাধিকবার ধর্ষণ করেন। আসামি সাদমান সাকিফকে দুই বছর ধরে চেনেন মামলার বাদী। তাঁর মাধ্যমেই ঘটনার ১০-১৫ দিন আগে সাফাতের সঙ্গে দুই ছাত্রীর পরিচয় হয়।
এজাহারে বলা হয়, ঘটনার দিন সাফাতের জন্মদিনে দুই ছাত্রী যান। সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল ও দেহরক্ষী তাঁদের বনানীর ২৭ নম্বর রোডের দ্য রেইনট্রি হোটেলে নিয়ে যান। হোটেলে যাওয়ার আগে বাদী ও তাঁর বান্ধবী জানতেন না সেখানে পার্টি হবে। তাঁদের বলা হয়েছিল, এটা একটা বড় অনুষ্ঠান, অনেক লোকজন থাকবে। অনুষ্ঠান হবে হোটেলের ছাদে। সেখানে যাওয়ার পর তাঁরা ভদ্র কোনো লোককে দেখেননি। সেখানে আরো দুই তরুণী ছিলেন। বাদী ও বান্ধবী দেখেন সাফাত ও নাঈম ওই দুই তরুণীকে ছাদ থেকে নিচে নিয়ে যাচ্ছিলেন। এই সময় বাদীর বন্ধু ও আরেক বান্ধবী ছাদে আসেন। পরিবেশ ভালো না লাগায় তাঁরা চলে যেতে চান। পরে আসামিরা তাঁদের গাড়ির চাবি শাহরিয়ারের কাছ থেকে নিয়ে নেন। তাঁকে খুব মারধর করেন।
এতে বলা হয়, ধর্ষণ করার সময় সাফাত গাড়িচালককে ভিডিওচিত্র ধারণ করতে বলেন। বাদীকে নাঈম আশরাফ মারধর করেন এবং তিনি প্রতিবাদ করবেন বলে জানিয়েছিলেন। এর পর বাদী ও বান্ধবীর বাসায় দেহরক্ষী পাঠানো হয় তথ্য সংগ্রহের জন্য। তাঁরা এতে ভয় পেয়ে যান। পরে লোকলজ্জার ভয় এবং মানসিক অসুস্থতা কাটিয়ে আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে আলোচনা করে মামলার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। এতে মামলা করতে বিলম্ব হয়।