এই দুঃসময়ে সবার আগে জীবন : প্রধান বিচারপতি
আপিল বিভাগের একটি মামলার শুনানিকালে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেছেন, জীবন ও জীবিকা দুই-ই গুরুত্বপূর্ণ। তবে করোনা মহামারির এই দুঃসময়ে সবার আগে জীবন।
আজ রোববার প্রধান বিচারপতির নেত্বত্বে ভার্চুয়ালি আপিল বিভাগে এক মামলার শুনানিকালে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল আরও বেশি ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ চালুর আহ্বান জানালে প্রধান বিচারপতি এ কথা বলেন।
আদালতে ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল প্রধান বিচারপতিকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘মাই লর্ড, বর্তমানে চারটি ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ পরিচালিত হচ্ছে। তার মধ্যে আজ আছে কেবল দুটি বেঞ্চ। রমজান চলছে, সামনে ঈদ। এই অবস্থায় আরও কিছু ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ বাড়ালে আইনজীবীরা উপকৃত হতো।’
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক আরও বলেন, ‘আপিল বিভাগ ও চেম্বার আদালত মিলে সপ্তাহে পাঁচদিনই সর্বোচ্চ আদালত চলছে। তাই আরও কয়েকটি হাইকোর্ট বেঞ্চ চালু করা যেতে পারে।’
গত এক বছরে আইনজীবীরা ভার্চুয়াল আদালত পরিচালনার সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছেন উল্লেখ করে ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, ‘তাই প্রয়োজনে আর ১০টি ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ চালু করলে আইনজীবীরা উপকৃত হতেন। আমি আইনজীবী সমিতির সম্পাদক, তাই প্রতিনিয়ত আইনজীবীরা কোর্ট বাড়ানের বিষয়ে আমাকেই বলেন। এজন্যই বারবার আপনাদের সামনে এ কথা বলা।’
এ সময় রুহুল কুদ্দুস কাজলের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘শুনেন, আমরাও বারের (আইনজীবী সমিতি) থেকে এসেছি। আমরাও আইনজীবীদের সমস্যাগুলো বুঝি। জীবন ও জীবিকা দুটিই গুরুত্বপূর্ণ। তবে এক্ষেত্রে আগে জীবন, পরে জীবিকা।’
সৈয়দ মাহমুদ হোসেন আরও বলেন, ‘সংক্রমণের ঝুঁকি বিবেচনায় এখন মাত্র ৪০ জন স্টাফ নিয়ে আপিল বিভাগ চলছে। হাইকোর্টের চারটি ভার্চুয়াল বেঞ্চে অনেক স্টাফ লাগছে। এই অবস্থায় আবার ১০টা হাইকোর্ট বেঞ্চ চালাতে গেলে হাজার স্টাফ লাগবে। তখন তাদের সংক্রমণ ঝুঁকি তৈরি হবে। আমরা সব বিষয় বিবেচনায় নিয়েই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
এ সময় বেঞ্চে থাকা আপিল বিভাগের অপর বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, ‘মিস্টার রুহুল কুদ্দুস, আপনি আইনজীবী সমিতির সম্পাদক। তাই আপনি আইনজীবীদের কথা ভেবে একথা বলছেন। কিন্তু প্রধান বিচারপতিসহ আমাদেরকে তো পুরো সুপ্রিম কোর্টের কথা ভাবতে হয়। এমনকি দেশের কথাও ভাবতে হয়। সেসব ভেবেই প্রধান বিচারপতি সিদ্ধান্ত দেন।’
সবশেষে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) দেওয়া বার্তা স্মরণ করিয়ে দিয়ে প্রধান বিচারপতি আদালতে যুক্ত সবার উদ্দেশে বলেন, ‘স্টে হোম, স্টে সেফ।’