করোনার ভারতীয় ধরনে আক্রান্ত পাঁচজনই সুস্থ : স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
করোনার ভারতীয় ধরনে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে পাঁচজনই সুস্থ রয়েছেন। আজ রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বুলেটিনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘জিনোম সিকোয়েন্স করে যে কয়টি পেয়েছিলাম সেটি আমরা এরই মধ্যে জানিয়েছি। তার মধ্যে পাঁচজন একেবারেই সুস্থ আছেন। তাদের কন্টাক্ট ট্রেসিং করেও আর কোনো সংক্রামিত রোগী পাইনি। সর্বশেষ আমরা ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ছয়জনের নমুনায় পেয়েছি। নতুন করে জিনোম সিকোয়েন্স হচ্ছে, যদি আরও পাই তাহলে সেটিও জানিয়ে দিব।’
অধ্যাপক নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘বর্তমানে করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা কম থাকলেও এ নিয়ে আত্মতুষ্টি বা সন্তুষ্টির কোনো কারণ নেই। এ ধরনের সংখ্যা যদি দিনের পর দিন পেতে থাকি তবেই একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারি। তার আগে পর্যন্ত মনে রাখতে হবে যে, সংক্রমণের যে দ্বিতীয় ঢেউ বা সেকেন্ড ওয়েভ চলছে আমরা তার মাঝখানে আছি। সেখান থেকে এখনো পরিত্রাণ পাইনি। কাজেই সবাইকে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে সতর্ক থাকতে হবে।’
করোনার উপসর্গ থাকা জনগণকে করোনা শনাক্তে নমুনা পরীক্ষায় বেশি বেশি করে উদ্বুদ্ধ করতে হবে বলে মন্তব্য করেন নাজমুল ইসলাম। তিনি আরও বলেন, ‘যত বেশি পরীক্ষা হবে তত বেশি রোগী শনাক্ত হবে। শনাক্ত রোগীদের জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের মাধ্যমে করোনার ভ্যারিয়েন্ট চিহ্নিত করা হবে।’
এ সময় নাজমুল আরও জানান, জিনোম সিকোয়েন্সিং একটু সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত উপযুক্ত ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে জিনোম সিকোয়েন্সিং করে গণমাধ্যমকে অবহিত করে। তিনি বলেন, ‘ভারত থেকে যেসব নাগরিক ফিরে আসছেন, তাদেরকে বাংলাদেশ সীমান্তে আসার পর প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হচ্ছে। কোনো কোনো স্থানে রোগী ও তাদের স্বজনরা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। নানাভাবে নিজ বাসগৃহে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। এটি একেবারেই যৌক্তিক নয়। কারণ এভাবে কোয়ারেন্টিন থেকে চলে গেলে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট করোনায় আক্রান্ত কোনো রোগী থেকে থাকলে পুরো দেশবাসীকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।’
এ ছাড়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এই কর্মকর্তা ভারত থেকে ফিরে আসা এসব বাংলাদেশি নাগরিকদের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে নিজের এবং অন্যদের জীবনকে বিপন্ন না করতে কোয়ারেন্টিন সেন্টারে অবস্থানের অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, হাসপাতালে বর্তমানে ভর্তি রোগীর চেয়ে খালি শয্যার সংখ্যা বেশি। সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে অক্সিজেন সিলিন্ডার, হাইফ্লো নেজাল ক্যানুলা, অক্সিজেন কনসেনট্রেটরের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে।
অধ্যাপক নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘বর্তমানে তিনটি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে নাগরিকরা ফিরে আসছেন। ফিরে আসা ব্যক্তিদের মধ্যে যাদের চিকিৎসা প্রয়োজন তাদের স্থানীয় জেলা, বিশেষায়িত কিংবা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসা প্রদানের সুযোগ রয়েছে। এ ছাড়া তাদের জন্য রাজধানীর মহাখালীর বক্ষব্যাধি হাসপাতালে সম্প্রতি খোলা ১০০ বেডও রয়েছে। প্রয়োজন হলে তাদের সেখানে রেখে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে অন্য হাসপাতালে স্থানান্তর করা হবে।’