টেকনাফে র্যাব ও ডাকাত দলের গুলিবিনিময়, ছালেহ বাহিনীর প্রধানসহ গ্রেপ্তার ৬
কক্সবাজারের টেকনাফে দুর্গম পাহাড়কেন্দ্রিক অপহরণ ও ডাকাতির অন্যতম মূলহোতা ছালেহ বাহিনীর সঙ্গে র্যাবের গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বাহিনীটির প্রধান হাফিজুর রহমান ওরফে ছালেহ উদ্দীনসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ জব্দ করা হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার (৫ মে) রাতে টেকনাফের বাহারছড়া পাহাড় এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এই বাহিনীর বিরুদ্ধে চলা অভিযান শুক্রবার রাত ১০টার দিকে শুরু হয়ে শেষ হয় আজ শনিবার (৬ মে) সকালে।
ছালেহ ছাড়া গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- নুরুল আলম (৪০), আক্তার কামাল (৩৭), নুরুল আলম ওরফে লালু (২৪), হারুনুর রশিদ (২৩) ও রিয়াজ উদ্দিন বাপ্পি (১৭)।
আজ দুপুরে কক্সবাজারের র্যাব-১৫ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
র্যাবের এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, টেকনাফে অপহরণের প্রবণতা বেড়েছে। সম্প্রতি গণমাধ্যমের মাধ্যমে জানতে পেরে সেখানে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়। এর মধ্যে ছালেহ বাহিনী অপহরণের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে খবর পাওয়া যায়। পরে, গহীন পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে ছালেহ বাহিনীর প্রধানসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, পাঁচ রাউন্ড গুলি, তিনটি একনলা বড় দেশি বন্দুক, দুটি একনলা মাঝারি বন্দুক, ছয়টি একনলা ছোট বন্দুকসহ মোট ১২টি দেশি বন্দুক, ১৭ রাউন্ড তাজা কার্তুজ, চার রাউন্ড খালি কার্তুজ, দুটি ছুরি ও ছয়টি দা জব্দ করা হয়।
খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘গ্রেপ্তাকৃতরা প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেন, টেকনাফের দুর্গম পাহাড়ে অবস্থান করে ছালেহ ডাকাতের সরাসরি নেতৃত্বে এই চক্রটি অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়, মাদক ব্যবসাসহ অন্যান্য অপরাধ কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। তার এই সন্ত্রাসী দলের সদস্য সংখ্যা ১২ থেকে ১৫ জন। ছালেহর নেতৃত্বে এই ডাকাত দলটি টেকনাফের শালবাগান পাহাড়, জুম্মাপাড়া ও নেচার পার্ক, বাহারছড়া ইউনিয়নের নোয়াখালীপাড়া পাহাড়, বড় ডেইল পাহাড়, কছপিয়া পাহাড়, জাহাজপুরা পাহাড়, হলবনিয়া পাহাড় ও শিলখালী পাহাড় এলাকায় অবস্থান করে অপরাধমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করত।’
ছালেহ বাহিনীর মুল হোতা ছালেহর কথা জানিয়ে র্যাবের এই কমান্ডার বলেন, ‘২০১২ সালে মিয়ানমার থেকে অবৈধ পথে বাংলাদেশে আসে ছালেহ। মিয়ানমার থেকে দেশে আসা রোহিঙ্গাদের তালিকা থাকলেও সরকারি তালিকা তার নাম পাওয়া যায়নি। তিনি তালিকাভুক্ত রোহিঙ্গা নন। প্রতিবারই অপরাধ করে ছালেহ মিয়ানমারে গিয়ে আত্মগোপনে থাকে।’
ছালেহ মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী গ্রুপ আরসার বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বলেও জানান খন্দকার আল মঈন।