দেশ ও গণতন্ত্র উদ্ধারে প্রয়োজন বিপ্লব : নজরুল ইসলাম খান
আজকে দেশে উন্নয়নের জোয়ার চলছে বলে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে এমন মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘উন্নয়ন বলতে সরকার কী বুঝাতে চায়? আইয়ুব খানও উন্নয়ন করেছে। উন্নয়ন হয়েছে আওয়ামী লীগ নেতাদের। যারা হাজার হাজার লাখ কোটি টাকা লুট করেছে তাদের উন্নয়ন হয়েছে। কোভিডের মাঝেও তারা বিদেশে টাকা পাচার করেছে।’
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে আজ শনিবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে জিয়াউর রহমানের কর্মময় জীবনের ওপর এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৮৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে জিয়া পরিষদ।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আগে শুনতাম ছাত্ররা নকল করে এখন শুনি শিক্ষকরাও নকল করে। আগে ভোট হতো দিনে এখন হয় রাতে। আগে মানুষ থাকতো ফার্স্ট হোমে এখন থাকে সেকেন্ড হোমে। আগে শুনতাম গুলশান-বনানী, এখন শুনি বেগমপাড়া। এই উন্নয়নে আমরা বাস করছি।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘যে মানুষটিকে সবচেয়ে বেশি স্মরণ করার কথা, শ্রদ্ধা করার কথা, বাংলাদেশ বির্নিমাণে যার সবচেয়ে বেশি অবদান, সে জিয়াউর রহমানকে মিথ্যা অভিযোগে আজ সমালোচনা করা হচ্ছে। জিয়াকে বীরউত্তম খেতাব দেওয়ায় সে খেতাব সম্মানিত হয়েছে। অথচ যাদের মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি কোনো অবদান নেই, তারাই তার খেতাব কেড়ে নেওয়ার অপচেষ্টা করেছে।’
নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আজকে জেলা ছাত্রলীগের এক নেতা দুই হাজার কোটি টাকার মালিক। তাহলে মূল দল ও কেন্দ্রীয় নেতারা কী পরিমাণ টাকা লুটপাট করেছে? শেয়ার বাজার লুট হয়েছে, ব্যাংক আজ ফোকলা। বিদ্যুৎ, গ্যাস, তেলের মূল্য বৃদ্ধির মাধ্যমে জনগণের কাছ থেকে টাকা লুট করে সৃষ্টি করা হচ্ছে এসব বেগমপাড়া।’
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের শত্রুরাও বলতে পারবে না সে দুর্নীতি করেছে। তার ব্যাংকে কোনো টাকা ছিল না, ঢাকায় তার কোনো বাড়ি নেই। তিনি তার কোনো ভাই-বোন বা নিকট আত্মীয়কে রাষ্ট্রীয় সুযোগ সুবিধা দেননি। তারই সহধর্মিণী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া স্বৈরাচার এরশাদের বিরুদ্ধে আপসহীন সংগ্রাম করে দেশে সংসদীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছেন। আজ সে নেত্রীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে অন্তরীণ করে রেখেছে। যার পিতা স্বাধীনতার ঘোষক, রাষ্ট্রপতি, মা প্রধানমন্ত্রী, সেই তারেক রহমানকেও মিথ্যা মামলা দিয়ে ফেরারি করে রেখেছে। দেশ ও গণতন্ত্র উদ্ধারে আজ প্রয়োজন বিপ্লব। আর এ বিপ্লবে দলমত নির্বিশেষে সকলকে অংশ গ্রহণ করতে হবে।’
সংগঠনের সভাপতি ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বীরমুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর ডা. আবদুল কুদ্দুসের সভাপতিত্বে যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। এসময় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট আবেদ রাজা, জিয়া পরিষদের মহাসচিব ড. এমতাজ হোসেন, কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুল্লাহীল মাসুদ, প্রফেসর ডা. হাসনাত আলী, প্রফেসর আবু জাফর খান, প্রকৌশলী রুহুল আলম প্রমুখ।