নওগাঁয় মসজিদের জমি নিয়ে বিরোধের জেরে মুসল্লিদের ওপর হামলা, আহত ৪
নওগাঁ শহরের পার-নওগাঁ দক্ষিণপাড়া মসজিদের জমি নিয়ে বিরোধের জেরে মুসল্লিদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় মসজিদের চার মুসল্লি মারাত্মক আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় দোষীদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে আজ শনিবার বিকেলে নওগাঁ-বগুড়া মহাসড়কে মানবন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে এলকাবাসী।
মসজিদের জমি নিয়ে বিরোধের জেরে গতকাল শুক্রবার এশার নামাজের পর হামলার এ ঘটনায় চারজন মারাত্মক আহত হন। আহতরা হলেন পার-নওগাঁ দক্ষিণপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মাহমুদ হাসান মামুন (৪৮), বাচ্চু শেখ (৫৫), আরিফ দেওয়ান (২৫) ও আনছার মোল্লা (৪০)।
আহতদের মধ্যে ছুরিকাঘাতে আহত মাহমুদ হাসান মামুনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তিনি বর্তমানে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। আহত বাচ্চু শেখও বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বাকিরা নওগাঁ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এ ঘটনায় আজ সকালে আহত মামুনের ভাতিজা রিপন হোসেন বাদী হয়ে ছয়জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। অভিযোগ পাওয়ার পর আজ বিকেলে আমিরুল ইসলাম পশারী লেবু নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে নওগাঁ সদর মডেল থানা পুলিশ।
এ ঘটনার প্রতিবাদে আজ বিকেলে আসরের নামাজের পার-নওগাঁ দক্ষিণপাড়া মসজিদ সংলগ্ন নওগাঁ-বগুড়া মহসড়কের ঢাকা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মানবন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে পার-নওগাঁ দক্ষিণপাড়া মসজিদের শতাধিক মুসল্লি ও এলাকাবাসী অংশ নেন। মানববন্ধনে মসজিদের মুসল্লি রিপন হোসেন, মোজাহিদুল ইসলাম, রবিউল ইসলাম, আশরাফুল দেওয়ান, ডা. মোস্তাক আহম্মেদ প্রমুখ বক্তব্য দেন।
বক্তারা বলেন, তিন বছর আগে পার-নওগাঁ দক্ষিণপাড়া জামে মসজিদের পুনর্নির্মাণ কাজের উদ্যোগ নেয় মসজিদ কমিটি। তখন থেকে মসজিদের জমি নিয়ে পার-নওগাঁ দক্ষিণপাড়া এলাকার আবুল হোসেন পশারী ও তাঁর ছেলেদের সঙ্গে মসজিদ কমিটির বিরোধ চলে আসছে। এ নিয়ে একাধিকবার শালিস বৈঠকও হয়েছে। গতকাল শুক্রবার এশার নামাজ শেষে মসজিদের কয়েকজন মুসল্লি মসজিদের সামনের রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় আবুল হোসেন পশারীর ছেলে টিপু সুলতান পশারী মসজিদ কমিটির সদস্যদের উদ্দেশ্য করে উসকানিমূলক কথা বলা শুরু করে। এ নিয়ে মসজিদের মসজিদের মুসল্লিদের সঙ্গে তাঁর কথা কাটাকাটি শুরু হয়। এক পর্যায়ে টিপু সুলতান পশারী, তাঁর ভাই হারুন অর রশিদ পশারী, আমিরুল ইসলাম পশারী, দেলোয়ার হোসেন পশারী ও জিল্লুর রহমান পশারী এবং বাবা আবুল হোসেন পশারী লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে মুসল্লিদের ওপর হামলা চালায়। এতে মসজিদের মুসল্লিদের মধ্যে চারজন মারাত্মক আহত হন। মানববন্ধন থেকে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে দ্রুত বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান তাঁরা।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নওগাঁ সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রাজিবুল ইসলাম বলেন, ‘মসজিদের মুসল্লিদের ওপর হামলায় ঘটনায় শনিবার সকালে আহত মাহমুদ হাসান মামুনের ভাতিজা রিপন হোসেন বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। এ অভিযোগে টিপু সুলতান পশারী, তাঁর আরও চার ভাই ও বাবাকে বিবাদী করা হয়েছে। অভিযোগ পাওয়ার পর শনিবার বিকেলে আমিরুল ইসলাম পশারী লেবু নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’