মানুষের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে, মানুষ বাঁচতে চায় : গয়েশ্বর
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, মানুষের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে, মানুষ বাঁচতে চায়।’
আজ রোববার (৫ মার্চ) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘জাতীয়তাবাদী প্রজন্ম ৭১’ এর উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধনে এসব কথা বলেন গয়েশ্বের। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপুসহ দলটির নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
গয়েশ্বর বলেন, ‘আমাদের নেতা রিজভী, সরাফত আলী সপুসহ সব রাজবন্দীদের মুক্তি চাই। আমাদের দাবি, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন। ৯৬ সালে জামায়াতের সঙ্গে সেদিন তত্ত্বাবধায় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করেছে আওয়ামী লীগ। সেদিন তারা আদমজীতে বিএনপির সমাবেশে বোমা হামলা করে বহু নেতাকর্মীকে হত্যা করেছিল।’
আওয়ামী লীগের উদ্দেশে এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘আপনার ৩২ নম্বর বাসভবনে জামায়াতের নেতা মতিউর রহমান নিজামীকে নিয়ে বৈঠকে করেছেন সেই ছবি আছে। আপনারা জনগণের আস্থা অর্জনে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। ৭১ সালের পরে লুটপাট ও কম্বল চুরি করার রেকর্ড আপনাদের আছে। ক্ষমতায় থাকতেই হবে এই ধারণা যাদের, তাদেরকে গণতন্ত্রমনা বলা যায় না।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে গয়েশ্বর বলেন, ‘আপনি গণভবনে বসে আসন ভাগাভাগি করবেন, তা হতে পারে না। ৯১ সালে আপনি গোপালগঞ্জ ছাড়া বাকি আসনে পরাজিত হয়েছিলেন। খালেদা জিয়া পাঁচটি আসনে প্রার্থী হয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। রাজত্ব যার নেশা, তার জন্য গণতন্ত্র নয়। আপনাকে ক্ষমতায় রেখে সাধারণ মানুষ ভোটের অধিকার কোনো দিনই ফিরে পাবে না। শুঁটকি মাছ পাহারার জন্য যেমন বিড়াল রাখা যাবে না, তেমনি ভোট পাহারার জন্য আপনাকে রাখা যাবে না।’
‘বর্তমান সরকারপ্রধান সব দুর্নীতির আড়ৎদার’ মন্তব্য করে গয়েশ্বর বলেন, ‘লুটপাটকারীদের বিরুদ্ধে আপনি কোনো ব্যবস্থা নেননি। ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে আবারও চুক্তি করেছে, অথচ ভারতেই তার বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হোক না-হোক, ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হচ্ছে। বিশ্ববাজারে কয়লার দাম ২০০ ডলার, অথচ আদানির সঙ্গে ৪০০ ডলারে চুক্তি করেছে। আদানি গ্রুপের সঙ্গে চুক্তি সরকার-সরকার নয়, একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে। দেশে এত জ্বালানি সংকট কেন? আসলে টাকা নাই। বিএনপির দাবি মানবেন কি মানবেন না, তা আপনাদের বিষয়। তবে, জনগণের দাবি মেনে দিনের ভোট দিনে দিন। মানুষ আর রাতের ভোট চায় না। নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা ছাড়ুন, না হলে আপনাদের কী হবে, তা কেউ জানে না।’
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘অচিরেই আপনাকে ক্ষমতা থেকে নামাতে হবে, কোথায় যাবেন সেটা খুঁজুন। মানুষের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে, মানুষ বাঁচতে চায়। দেশটা কিন্তু ভাষণে মুক্ত হয় নাই, যুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন হয়েছে। আবারও ৭৪ এর দুর্ভিক্ষ কড়া নাড়ছে। কাফনের কাপড় ছাড়া মানুষের দাফন হবার দিন ঘনিয়ে আসছে।’
গয়েশ্বর বলেন, ‘বিএনপিকে ভয় দেখিয়ে লাভ নাই, বিএনপি কাউকে ভয় পায় না। আপনি পদত্যাগ করুন, নিরপেক্ষ নির্বাচন দিন, তাহলেই সব সমস্যার সমাধান হবে।’
জাতীয়তাবাদী প্রজন্ম ৭১ এর সভাপতি ঢালী আমিনুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মো. রহমতুল্লাহ, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, কৃষক দলের খলিলুর রহমান, মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আব্দুর রহিম প্রমুখ।