সোয়া তিন বছর পর কিশোর রাসেল হত্যার রহস্য উদঘাটন
গাজীপুরে বহুল আলোচিত কিশোর রাসেল (১৮) হত্যা মামলার প্রায় সোয়া তিন বছর পর রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এ হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি জয়নাল ওরফে জুয়েলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে গাজীপুর পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।
গ্রেপ্তারকৃত জয়নাল ওরফে জুয়েল (৩০) ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ থানাধীন ভোমরাদহ ইউনিয়নের জনগাঁও গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দা।
পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার জানান, গত ২০১৮ সালের ২ এপ্রিল সদর থানাধীন টেক ভাড়ারিয়া (মারীয়ালী কলাবাগান) এলাকার ইদ্রিস আলীর রিকশার গ্যারেজ থেকে ভাতিজা রাসেলের (১৮) রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের মা পারুল আক্তার (৩৬) বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। মামলাটি গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর থানা পুলিশ ছয় মাস এবং পরবর্তীতে জিএমপি সদর থানা পুলিশ দীর্ঘ ১৪ মাস তদন্ত করে। গাজীপুর জেলা এবং জিএমপি পুলিশ কোনো রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি। এরপর ঢাকা পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স চাঞ্চল্যকর ও ক্লুলেস এ মামলাটি পিবিআই গাজীপুর জেলাকে তদন্তের নির্দেশ দেন। পিবিআইয়ের তদন্তকালে তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে এ ঘটনার মূল আসামি জয়নাল ওরফে জুয়েলকে (৩০) স্থানীয় টেক ভাড়ারিয়া মসজিদ সংলগ্ন রাস্তা থেকে গত ১৯ আগস্ট গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তীতে জুয়েলকে রিমান্ডে নিয়ে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করার এক পর্যায়ে তিনি রাসেল হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন।
পুলিশ সুপার আরও জানান, গতকাল সোমবার তাকে আদালতে সোপর্দ করলে তিনি নিজেকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত এবং অন্য আসামিদের নাম উল্লেখ করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রায় সোয়া তিন বছর পর চাঞ্চল্যকর কিশোর রাসেল হত্যার রহস্য উন্মোচিত হয়েছে।
পুলিশ সুপার জানান, গ্রেপ্তারকৃত আসামি জয়নাল ওরফে জুয়েল এবং তার সহযোগীরা মাদকসেবী এবং বিভিন্ন ধরনের চুরির সঙ্গে জড়িত। ইদ্রিসের পার্শ্ববর্তী আশরাফ ড্রাইভারের গ্যারেজের অটোরিকশা চালাতেন জয়নাল। ঘটনার রাতে জয়নাল ও তার সহযোগীরা নতুন অটোরিকশা চুরি করার জন্য ইদ্রিসের গ্যারেজে প্রবেশ করে। জয়নাল টিনের ফাঁক দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে এবং অন্যরা রাস্তায় পাহারায় থাকে। জয়নাল গেইটের চাবি বালিশের নিচে খোঁজার সময় গ্যারেজে ঘুমিয়ে থাকা ইদ্রিসের ভাতিজা রাসেল জেগে উঠে ডাক চিৎকার শুরু করে। এ সময় তাদের দেখে চিনে ফেলায় গ্যারেজে থাকা হাওয়া দেওয়ার পাম্পার দিয়ে মাথায় আঘাত করে রাসেলকে নৃশংসভাবে হত্যা করে বলে জানিয়েছে জয়নাল।